জনগণের ভালোবাসায় আবারও নির্বাচন করতে বাধ্য হচ্ছি- আমাম হোসেন

ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছুটছেন জনগণের কাছে। কেউ কেউ দলের উচ্চ পর্যায়েও দোড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিন এর এবারের আয়োজন ‘গ্রামীণ জনপদে ভোট’ শীর্ষক সাক্ষাৎকার পর্ব। এ পর্বে মেহেরপুর প্রতিদিন এর মুখোমুখি হয়েছিলেন মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন (মিলু)।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন আমাদের প্রধান প্রতিবেদক এম এফ রুপক। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশটি এখানে তুলে ধরা হলো।

মেহেরপুর প্রতিদিন- আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে কি ভাবছেন?

আমাম হোসেন মিলু – আমি পরপর দুইবার আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। জনগণের দেওয়ায় বিপুল পরিমাণ ভোটে আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম। এরই ধারাবহিকতায় আমি বর্তমানে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আমি অংশ নিতে চেয়েছিলাম না। কিন্তু জনগণের ভালোবাসা আমাকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে বাধ্য করেছে।

মেহেরপুর প্রতিদিন-আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?

আমাম হোসেন মিলু- আগামী নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। ২০১১ সাল থেকে আমি নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি যথাযতভাবে পালন করেছি। আজ পর্যন্ত কোন ধরনের দুর্নীতি আমি নিজে করিনি এবং আমার ইউনিয়নের কোন সদস্যকে করতেও দিইনি। সততার সাথে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এছাড়াও আমি মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। সেক্ষেত্রে আমার ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিকল্প কিছু ভাববে বলে আমার মনে হয় না। ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেকেই প্রার্থী হতে চাইবে। সবাই সবার মত করে মনোনয়ন নেওয়ার জন্য চেষ্টা করবে। এ ক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ড আছে আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রি ফরহাদ হোসেন এমপি আছেন। উনি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে যোগ্য প্রার্থীরাই মনোনয়ন পাবে বলে আমি আশা করছি।

মেহেরপুর প্রতিদিন -বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে আপনার ইউনিয়নে নির্বাচনটি কেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন?

আমাম হোসেন মিলু- বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে এ জন্য আমি তাদের স্বাগতম জানাই। একটি রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে না যায় তবে সেই দলের আর কোন অস্তিত্ব থাকে না। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে যোগ্যরাই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে। নির্বাচনে জয় পরাজয় থাকবেই। তারপর আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছে এবং এই ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এতে জনগণ অন্য কোন দলকে সমর্থন করবে বলে আমার মনে হয় না। এছাড়াও বিএনপির মনোনয়ন বানিজ্যের কারণে ঐ সংগঠনের উপর জনগণের আস্থা হারিয়ে গেছে। আমি মনে করি আগামী ইউপি নির্বাচনে শুধু মহাজনপুর ইউনিয়নই না, মুজিবনগর উপজেলার চারটি ইউনিয়নেই নৌকার প্রার্থী জয়ী হবে।

মেহেরপুর প্রতিদিন- দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া ছিল সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?

আমাম হোসেন মিলু-আপনারা জানেন মহাজনপুর ইউনিয়ন একটি সন্ত্রসী অধ্যুষিত এলাকা ছিল। জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারতো না। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর আমার মূল লক্ষ্য ছিল এলাকা থেকে সন্ত্রাস দমন করা। মাননীয় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ও প্রশাসনের সহযোগীতায় মহাজনপুর ইউনিয়ন এখন সন্ত্রাস মুক্ত। এটা আমার জন্য বড় সাফল্য। এছাড়াও প্রতিটি ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তা নির্মাণ, প্রতিষ্ঠান গুলো চাকচিক্য করাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছি। ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি সেবা জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

মেহেরপুর প্রতিদিন- আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে কি কি কাজ করতে চান?

আমাম হোসেন মিলু -আমদের উন্নয়নমূলক কিছু কাজ বাকি আছে। রাস্তার কিছু কাজ এখনো করা হয়নি। ব্রিজ এবং কালভাট কয়েকটি জায়গায় প্রয়োজন। আমাদের বিলের সুইচ গেটের জন্য জলাবদ্ধতার কারণে এবার বেশ কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এই বিলটি খনন করে সুইচ গেটটি মেরামত করতে হবে। আমাদের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মহদ্বয়ের অত্যন্ত সু দৃষ্টি আছে আমাদের ইউনিয়নের প্রতি। আমি আশা করছি আগামী এই সকল কাজ গুলো আমি করবো।