
বর্ষাকালে হাটু পানিতে জলাবদ্ধতা ও সপ্তাহে দুদিন হাট বসে বিদ্যালয় মাঠে। এ দুই ভোগান্তিতে বিপর্যয়ে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সহড়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে ওই স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ ভোগান্তি নিয়ে দিনের পর দিন উপজেলা ও জেলা পযার্য়ের বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়েও কোন সমাধান হয়নি।
১৯৩৫ সালে ৬৪ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি বর্তমানে অবকাঠামোগত সংকটে রয়েছে। চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও তার মধ্যে দুটি টিনশেডে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৬০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ২১ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩০ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩৪ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৫ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে বৃষ্টির পানিতে পুরো এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে, শিক্ষার্থীদের আসা—যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফলে শিক্ষা কার্যক্রমও প্রতিদিনই বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
শুধু বর্ষাকাল নয়, শুষ্ক মৌসুমেও হাটের জন্য সমস্যার শেষ নেই। স্কুল চত্বরজুড়ে গরু—মুরগি, দোকানপাট ও লোকজনের কোলাহল পাঠদানকে করে তোলে দুঃসাধ্য।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাবিয়া সালমা বলেন, “বিদ্যালয়ের পরিবেশটি বর্তমানে শিক্ষার অনুপযুক্ত। বর্ষায় পানি জমে যায়, আবার হাট বসায় ক্লাস নেওয়াই কষ্টকর হয়ে যায়। অনেক সময় আমরা শিশুদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় থাকি। বারবার বলা হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান পাচ্ছি না।”
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানায়, “আমার বই খাতা ভিজে যায়। হাট বসলে অনেক লোক আসে, ক্লাস করতে পারি না। তখন অনেক শব্দ হয়।” চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রিমা খাতুন জানায়, “পানির ভেতর দিয়ে হেঁটে স্কুলে আসি। কেউ কেউ পড়ে যায়। আমাদের ক্লাসরুমেও পানি ঢুকে যায় মাঝে মাঝে।” পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল জানায়, “হাটের জন্য জায়গা থাকে না। গরু—মুরগি থাকে সামনে। তখন আমরা স্কুলে আসতেও ভয় পাই।”
এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমিন বলেন— “বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের অবৈধ হাট উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়েছে।”