ঝিনাইদহের শহীদ আলতামতি মৃত্যু’র ২৬ বছরেও পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি কেউ!

১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারী বিএনপি’র একদলীয় নির্বাচনে নিহত আলতামতির বড় ছেলে রিপনের বয়স এখন ৩০ বছর এইচএসসি পাশ করেও পেশায় কৃষক, ছোট ছেলে শিপনের বয়স ২৬ বছর ২মাস লেখাপড়া শিখে এখন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ছোট বেলায় মাকে হারিয়ে পায়নি মায়ের স্নেহ ভালোবাসা। মানুষ হয়েছে কখনো দাদির কাছে কখনো বা নানির কাছে এভাবে অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠেছে তারা।

ঘটনাটি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামে। আলতামতি একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়ে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী বিএনপির একদলীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়। নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে সারাদেশের ১২জন নিহত হয়।

হরিনাকুন্ডু উপজেলার ভাতুড়িয়া ভোট কেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আলতামতি। রেখে যায় তার নাবালক দুই শিশু সস্তান। বড় ছেলে রিপনের বয়স ৪ বছর এবং ছোট ছেলে শিপনের বয়স তখন ২মাস। অনেক কষ্টে শিষ্টে মানুষ হয়েছে তারা। একই বছর ১২ই জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের নানার জিম্মায় ১লক্ষ টাকা পারিবারিক অনুদান দেন। সেই টাকা রিপন শিপনের বাবা আব্দুল খালেক বিভিন্ন সময় নিয়ে খরচ করেছে। পরবতির্তে সে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সন্তানদের আর সেভাবে খোজ নেইনি।

প্রথম দুই চার বছর পারিবারিক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহযোগীতায় আলতামতির মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা হলেও এখন আর সেসব হয়না।

এমনকি আওয়ামী লীগ বার বার ক্ষমতায় আসার পরেও আর কোনদিন কোন নেতা খোঁজ নেই নি সেই এতিমদের। তাদের কপালে একটা পিয়নের চাকুরী পর্যন্তও জোটেনি। দেশে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন কোটায় হাজার হাজার মানুষের চাকুরী হচ্ছে, পরিবার পাচ্ছে নানান সুযোগ সুবিধা। রাষ্ট্রীয় সংঘাতে মা হারানো এই এতিমদের কি সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার নেই ?

এমন প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে তাদের স্বজনদের মাঝে। উল্লেখ্য যে এই কলঙ্ক জনক নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে সারা দেশে ১২জন নিহত হয়েছিল। যেহেতু আওয়ামী লীগের সরকার এখন ক্ষমতায় আছে সেহেতু এসব শহীদের স্বজনদের দাবি সেদিনে নিহত এই ১২জন কে শহীদ হিসেবে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতিদানসহ তাদের সন্তান ও স্বজনদের সরকারি কোটায় সামর্থ অনুযায়ী চাকুরী অথবা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হোক।