ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ চুড়ান্ত না হলেও অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
সেই সময়কে সামনে নিয়েই ঝিনাইদহের ৪টি আসনের বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াতসহ কিছু রাজনৈতিক দলের প্রার্থী চুড়ান্ত হলেও বিএনপিতে রয়েছে বিভেদ, সেই বিভেদকে মাথায় নিয়েই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সংযোগ ও সম্পর্ক বজায় রাখছেন, পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে নিজ নিজ দলের হাইকমান্ডে জোর যোগাযোগ রাখছেন। ঝিনাইদহের চারটি সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভেতরে ভেতরে ভোটের মাঠ গোছাতে নেমে পড়েছেন। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি জনমত গঠন ও সমর্থন বাড়াতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রচারণা কমিটি করে নানা কৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য জাতীয় দিবস সামনে এলেই বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোট চাইতে ঢাকা থেকে গ্রামে ছুটে আসছেন। অনেকে এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন টাঙিয়ে প্রচার করে চলেছেন। থেমে নেই অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রচারণাও।
এদিকে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঝিনাইদহের চারটি আসনের মধ্যে হাই প্রোফাইল রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এখনো সামনে আনতে পারেনি। জেলার ছয়টি উপজেলায় এনসিপির দলীয় কর্মসূচিও তেমন একটা দেখা যায় না।
ছয়টি উপজেলা ও ছয়টি পৌরসভা নিয়ে ঝিনাইদহ জেলায় চারটি সংসদীয় আসন গঠিত। আসনগুলো হলো- ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা), ঝিনাইদহ-২ (সদর আংশিক - হরিণাকুন্ডু), ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর - মহেশপুর) ও ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদরের আংশিক)।
জানুয়ারি ২০২৪ সালে প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী ঝিনাইদহের চারটি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ এক হাজার ৩৮০ জন। সর্বশেষ এই ভোটার তালিকা অনুযায়ি এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর মধ্যে ঝিনাইদহ-১ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ছয় হাজার ৩৩৬ জন। এ আসনে নারী ভোটার এক লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৭ জন।
ঝিনাইদহ-২ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৩৭ হাজার ৫৩৩ জন ও নারী ভোটার দুই লাখ ৩৮ হাজার ৭৬২ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন পাঁচজন।
এছাড়া ঝিনাইদহ-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ তিন হাজার ২২৪। এর মধ্যে নারী এক লাখ ৯৯ হাজার ২৭৭ ও পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৩ হাজার ৯৪৪ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন।
ঝিনাইদহ-৪ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১৫ হাজার ৫২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৯ হাজার ৬১৬ জন। এ আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন চারজন।
তবে এবছরের জানুয়ারিতে শেষ হওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলার চারটি আসনেই ভোটার সংখ্যা বেড়েছে।
ভোটের মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থী যারা
ঝিনাইদহ-১: এ আসনে বিএনপির একাধিক হাই প্রোফাইল সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। তারমধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে জাচ্ছেন, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে উপজেলায় তার অনুসারি নেতা কর্মীরা বেশ গুঞ্জন ছড়াচ্ছেন। তিনিও নিয়মিত শৈলকূপার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়ে চলেছেন। উপজেলা জুড়ে তার অনুসারি বিশ্বস্ত কর্মী সমর্থকও রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। দলেও রয়েছে তার ক্লিন ইমেজ। ভোটের মাঠে সেই ইমেজকে বেছে নিতে পারেন সাধারণ ভোটাররা।
একই আসনে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এরই মধ্যে দলীয় কর্মসূচিগুলোতে মাঠঘাট দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। নিজস্ব দলীয় কর্মী বাহিনীসহ নিজের স্বচ্ছ ইমেজকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে এগিয়ে যেতে চান তিনি। সাধারণ ভোটারদের কাছেও বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডুর বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দলীয় হাই কমান্ডেও রয়েছে তার শক্ত অবস্থান। এছাড়াও সাবেক এমপি আব্দুল ওহাবসহ আরও দু একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে বিএনপিতে তবে ধারণা করা হচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল, মো: আসাদুজ্জামান এবং কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডুর মধ্যেই যে কেউ পেতে পারেণ আসনটি।
এছাড়া এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন শৈলকূপা উপজেলা জামায়াতের আমির এএসএম মতিউর রহমান। নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চুড়ান্ত না হলেও জামায়াতের এ নেতাকে সম্ভব্য প্রার্থী ঘোষণা করায় তিনি সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। তবে দলটির উপজেলা সভাপতি এ আসন থেকে আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। তবে আসনটিতে বিএনপির প্রভাব বেশি থাকায় তাদের জয়ের পাল্লা ভারি বলে জানা গেছে। এছাড়া গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি থেকে ঝিনাইদহ-১ আসনে তেমন কোনো জোরাল প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না।
ঝিনাইদহ-২: এই আসনটি ঝিনাইদহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন। জেলা সদরে এই আসনটি হওয়ায়, সব দলই এ আসনটিকে নিজেদের
ডেরায় রাখতে চায়। এ আসনে বিগত দিনে বিএনপির এক চেটিয়া আধিপত্য ছিল। তবে বিগত ১৬ বছরে বিতর্কিত একাধিক নির্বাচনে ভোট দিতে না পেরে ঝিমিয়ে পড়েছিলেন বিএনপির তৃণমূল সমর্থকরা। এবার তারা ভোটের অপেক্ষায় রয়েছেন।
ভোটাররা বলছেন, তারা এবার নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। এ আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে জেলা বিএনপির সভাপতি ও হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. এম এ মজিদ শক্ত অবস্থানে রয়েছে, তার মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেণ। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সাবেক এমপি মসিউর রহমানের বড় ছেলে কেন্দ্রীয় ড্যাবের নির্বাহী সদস্য ডা.ইব্রাহিম রহমান বাবু। এছাড়া ঝিনাইদহ-২ আসনে ভোটের মাঠে জোরেশোরে নেমেছেন গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, তিনি মাঝে মাঝে এলাকায় গণসংযোগ পথসভার মাধ্যমে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। বিএনপি কিম্বা অন্য কোন দলের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নির্বাচনী জোট হলে এ আসন থেকে রাশেদ খান কে মনোনয়ন দেওয়ার গুঞ্জুন শুনছেন অনেক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশ্লেষকগণ, তবে বিএনপি ছাড়দিলে এই আসন রক্ষা করা কষ্টকর হয়ে পড়বে তাদের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকরকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছেন, তিনি দলের একক প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দলীয় কর্মসূচি ও সামাজিক কার্যক্রমের পাশাপাশি ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা কর্মীরা। জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে হরিণাকুন্ডু ও সদরের পশ্চিমাঞ্চলে। সে ক্ষেত্রে বিএনপিতে বিভাজন দেখাদিলে বা দলে বিদ্রহী কোন প্রার্থী থাকলে জামায়াত এ আসনটি দখলে নিয়ে নিতে পারে বলে ধারণা করছেন সাধারণ ভোটাররা।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যদি জোটগত নির্বাচন না করে তাহলে তাদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে আগামী নির্বাচনে দলটির জেলা সভাপতি এইচএম মোমতাজুল করীম লড়তে পারেন এ আসন থেকে। এছাড়া বাম জোটের প্রার্থী হিসেবে বাসদে’র এ্যাড. আসাদুজ্জামান আছাদ এই আসনে থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মাঝেই থাকবে ভোটের মূল লড়াই।
ঝিনাইদহ-৩: জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এ আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সমর্থক সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নির্বাচনেও একচেটিয়া অবস্থান ধরে রেখেছে জামায়াত। তবে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোতে বদলে যায় এ আসনের ভোটের চিত্র।
সর্বশেষ ২৪ এর ৭ জানুয়ারি নির্বাচনেও কারচুপি করার পরও এ আসনে সর্বসাকুল্যে ভোট পোল হয়েছিল ৩০% এর মতো। এ আসনে জামায়াতে ইসলামী একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে আগেই। অধ্যক্ষ মতিয়ার রহমান এ আসন থেকে লড়বেন। ইসলামী বক্তা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় মতিয়ার রহমানের বাড়তি ইমেজ রয়েছে। এছাড়া নির্বাচনকে সামনে রেখে আগেভাগেই প্রচার-প্রচারণা উঠান বৈঠক, ফেস্টুন ব্যানার লাগিয়ে শুভেচ্ছা বার্তা পৌছে দিচ্ছেন জামায়াতের এ প্রার্থী।
গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপির একাধিক হাই প্রোফাইলের প্রার্থী রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে বিএনপির একাধিক নেতা কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এ আসন থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, ঝিনাইদহ- ৩ আসনের সাবেক জনপ্রিয় এমপি প্রয়াত শহিদুল ইসলাম মাস্টারের সন্তান মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদি হাসান রনি ও সাবেক জাসাস নেতা ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী মনির খান এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে মনোনয়ন যেই পান না কেন, লড়াই হবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর সঙ্গে। বিএনপি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে লড়াইটা সমানে সমান হবে। অন্যথায় জামায়াতের পাল্লাই ভারি হবে।
এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ এবং বাসদ তাদের একক প্রার্থী দিতে পারেন বলেও শুনা যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ-৪: জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আসন কালীগঞ্জ। এ আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। দলীয় কর্মসূচি পালনেও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোটের মাঠের হিসাব নিকাশ কষছেন। নিজ নিজ প্রভাব ও অবস্থান জানান দিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের শোডাউন। এমনকি তাদের সমর্থকরা একাধিকবার সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন।
এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। বিএনপির তৃণমূলে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক নেতা হওয়ায় তার রয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। এছাড়া এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হামিদুল ইসলাম। তিনিও ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জোরেশোরে, স্থানীয় ভাবে তার রয়েছে নিজস্ব কর্মী সমর্থক ও জনপ্রিয়তা, বহু হামলা মামলার শিকার হওয়া মানুষের ডাকে সাড়াদিয়ে যেকোন সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন এই নেতা। এছাড়া সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টুর স্ত্রী মুর্শেদা জামান এই আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছে। এদিকে এই আসন থেকে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলাম। উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবু তালেব এ আসন থেকে লড়বেন। তিনি প্রতিনিয়তই নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে। এছাড়া এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মুফতী আব্দুল জলিল।
এ আসনে ভোটের মাঠে লড়বেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন। ক্লিন ইমেজের তরুণ রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজ নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও ঝিনাইদহ শহরে তিনি বেশ পরিচিত জনপ্রিয় মুখ। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ায় তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছেন।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য করছেন তার মধ্যে কিছু সংখ্যক ভোটারের কাছে প্রশ্ন করলে তারা জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তাদের বিশ্বাস। ভোটাররা আগামী নির্বাচনে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে ক্লিন ইমেজের সৎ, যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের ভোট দিতে চান। ভোটাররা পেশীশক্তি প্রদর্শনকারী, ভয়ভীতি দেখানো, টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ ও অসৎ প্রভাব বিস্তারকারীদের ভোটের মাধ্যমেই জবাব দিতে চান।
নির্বাচনে অংশ গ্রহন এবং প্রস্তুতি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা জাময়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক আলী আজম মোহা.আবু বকর বলেন, আমাদের ঘোষিত ৫দফা দাবি মানলেই আমরা যেকোন সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার, জাতীয় পার্টিসহ ১৪দল নিবন্ধন বাতিল, জুলাইসনদ বাস্তবায়ন করলে আমরা নির্বাচনের জন্য সর্বদা প্রস্তুত আিছ। আর ঝিনাইদহের নির্বাচন সম্পর্কে বলেন আমরা যেখানেই যাচ্ছি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি আশাকরি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের সংখ্যা গরিষ্ট আসনে আমরা জয়লাভ করব।
নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড. এম.এ মজিদ বলেন আমরা এই নির্বাচনকে বাংলাদেশের ভবিষ্যত গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মৌলিক অধিকার, সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত, ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনপিকে বিজয়ী করতে হবে। আর এ লক্ষ্যে আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে আলাদা কমিটি করে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। তিনি বলেন, বিগত দিনে ঝিনাইদহ-২সহ ঝিনাইদহের প্রতিটি আসন থেকে আমরা বার বার জয়লাভ করেছি। এই নির্বাচনেও ইনশাল্লাহ আমরা প্রতিটি আসন থেকে জয়লাভ করব।
তরুন, যুবসমাজ ও মহিলা ভোটাররা এবার নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবেন, কারণ এর আগে তারা সঠিক ভাবে ভোট দিতে পারেনি। সবার মধ্যেই ভোট দেওয়ার আকাঙ্খা কাজ করছে, তবে তারা সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেবেন বলে জানান। যায়হোক ব্যালটের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চাই সবাই।