ঝিনাইদহে এক মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা পরিবারকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা

ঝিনাইদহে সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হাফিজুর রহমানের জমি জায়গা দখল, চাঁদাদাবী, জমির গাছ কেটে নেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি দেখিয়ে পরিবারকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করার অভিযোগ উঠেছে গ্রামের একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে।

পরিবারটি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, এমনকি থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। পরিবারটি এখন কার্যত গ্রামের ঐ প্রভাবশালী মহলের দ্বারা একঘরে ও অবরুদ্ধ হয়ে আছে। আশে পাশের কাউকে তাদের বাড়ীতে যেতে দেওয়া হয়না, কেউ তাদের পক্ষে স্বাক্ষি দিতে চাইলে তাকে নানা ভাবে হুমকী ধমকী ও ভয় ভীতি দেখানো হয়।

খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা তার বাড়িতে গেলে তাদের নিকট এসব অভিযোগের কথা বলেন মুুক্তিযোদ্ধা সাবেক সেনা সদস্য হাফিজুর রহমান, তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম এবং মেয়ে শাহানাজ পারভীন।

বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া এই মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, যৌবনের মুল্যবান সময় যখন সেনা বাহিনীতে দেশের জন্য কাটিযেছি তখন অর্থের লোভ করেনি এখনো নেই অতি কষ্ঠে ছেলে মেয়েদের মানুষ করেছি। বাড়িঘর কিছুই করতে পারিনি এখনো মাটির ঘরে থাকি। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আর পেনশানের টাকা দিয়ে চলে সংসার। ছেলে মেয়েরা সবাই যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত, ছেলে গ্রামে থাকলে তাকেও নানা ভাবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করা হয়।

এর আগে ঈদগাহ নির্মাণ কালে ৪শতক জমি জোর করে দখল করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ঐ জমিতে যেসব গাছ পালা ছিল তাও কেটে নেওয়া হয়েছে। বাড়ির আশেপাশে ময়লা ফেলে রাখা হয়, বাড়ির পাশে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ধরনের অঙ্গ ভঙ্গি করে থাকে ঐ প্রভাবশালী মহলের উস্কানীতে। মোটা অংকের চাঁদা দাবি করায় একই গ্রামের বাবর আলী ছেলে মধু এবং মোহন, ও অশ্বিন কুমারের ছেলে উৎপলের বিরুদ্ধ আদালতে মামলা করেছে ভূক্তভোগি মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান। যার নং জিআর ২১২/২২১ তারিখ ১৬/০৪/২০২১ইং।

পুলিশ তাদের গ্রেফতার করলে গ্রামের কিছু প্রভাবশালীরা তাদের আবার হুমকী ধমকী দিচ্ছে এবং তাদের কে একঘরে করে অবরুদ্ধ করে রখেছে বলে তারা জানান। এই বিষয়ে নিরাপত্তার জন্য মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের মেয়ে শাহানাজ পারভীন হালিম, কামাল কাজী, সোনালী কাজী, জসিম ও জায়েদাসহ গ্রামের বেশ কয়েকজনের বিরদ্ধে ঝিনাইদহ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। এবিষয়ে অভিযুক্ত হালিম ও কামাল কাজী সহ গ্রামে কিছু লোক জানান ঘটনা আদৌও সত্য না আমরা কখনো তাদের হুমকী ধমকী বা চাঁদা দাবী করি নাই।

ঈদগাহ মাঠে তাদের জমি আছে এটা সত্য আমরা তাদের জমি বিক্রি করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা সেটা শুনেন না। তবে তাদের কোন গাছ পালা জোর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ অশ্বিকার করেন। বিষয়টি নিয়ে ফুরসন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুল মালেক মিনা জানান মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। আমি শুনেছি তার পরিবার সাথে গ্রামের কাউকে মিসতে দেওয়া হচ্ছেনা এক ঘরে করে রাখা হয়েছে । বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ জনক যারাই এর সাথে জড়িত থাকনা কে তাদের কাজটি ঠিক হচ্ছেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিষয়টি শুরাহা করার চেষ্ঠা করে যাচ্ছি বলে তিনি জানান।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সেনা হাফিজুর রহমানের পরিবার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাসহ প্রভাবশালী কচক্রী মহলকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।