ঝিনাইদহে রাস্তা নেই, তবুও ব্রীজ

পিছনের লিড
ছবি-৭

ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সুরাট ইউনিয়নের সুরাট গ্রামে রাস্তা নেই তবুও পরের জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে ব্রীজ। এর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। যার দুই পাশে নেই কোন সরকারি রাস্তা। এখন ব্রীজটি ধান শুকানোর কাজে ব্যবহার করছে স্থানীয় জনগণ। জমির মালিকের অভিযোগ, জমি বাবদ তাকে কোন প্রকার অর্থ পরিশোধ না করেই ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়।
উপজেলা পিআইও অফিস সূত্রে জানা যায়, সুরাট গ্রামের ঝাপের খালের উপর এক পেয়ে পথের মাঝে ১৬ লাখ ৩১ হাজার ৩২৫ টাকা ব্যয়ে ২০ ফিটের ব্রীজটি নির্মাণ করেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করেছে ঝিনাইদহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জেন্টস ফ্যাশন।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই কাজের টেন্ডার হয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন এই টেন্ডারের লটারি পরিচালনা করেন। কিন্তু এই এক-পায়ের পথের উপর এত টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রীজটি কোন কাজেই আসছে না বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
এই বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিউটন বাইন বলেন, আমি এখানে যোগদান করার পূর্বেই ব্রীজটি নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এজন্য আমার কিছুই করার ছিলো না।
এই বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা বজলুর রশিদের কার্যালয়ে সাক্ষাতের জন্য তিন দিন গেলেও তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। তাকে মোবাইলে বার বার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
এই অফিসের এক কর্মচারী জানান, আমরা শুধু পোস্টম্যানের মত চিঠি আদান প্রদান করি। প্রকল্প বিষয়গুলি সব উপজেলা প্রকল্প অফিসাররা দেখেন।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদহ থেকে সুরাট যাওয়ার পাকা রাস্তার পাশেই ঝাপের খালের পাশ দিয়ে পশ্চিমে মাঠে যাওয়ার এক পেয়ে পথের উপরে নির্মাণ করা হয়েছে ব্রীজটি। এই ব্রীজের উপর ধান শুকাচ্ছে স্থানীয় এক নারী। রাস্তা করার সরকারি কোন জমিও নেই এখানে। ব্রীজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে কায়েক শত ফিটের মধ্যে কোন রাস্তা নেই। ব্রীজের দক্ষিণ প্রান্তে জলাকার ২০-২২ ফিটের মত। দেখে মনে হচ্ছে পুকুর খনন করা হয়েছে। পূর্বে এই যায়গায় পানি জমে না থাকলেও ব্রীজ নির্মাণের বৈধতা দেখাতে এখানে খনন করা হয়েছে।
নাচনা-সুরাট সড়কের সাথে এই ঝাপের খালে ২০০ মিটারের মধ্যে আরও ২টি ব্রীজ রয়েছে। এই দুটি ব্রীজে সংযুক্ত খাল দিয়ে আশপাশের ফসলি মাঠ থেকে বৃষ্টির পানি নেমে আসে।
জমির মালিক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার জমি বাবদ কোন প্রকার অর্থ প্রদান না করেই ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।