ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজের ভিপিসহ তিন ছাত্রলীগ নেতা নিহত

কলেজের অভ্যান্তরিন কোন্দলে প্রতিপক্ষ গ্রুপের ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘনায় কলেজের ভিপিসহ তিন ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছে।

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা সড়কের আঠারো মাইল নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি মুরাদ বিশ্বাস, ছাত্রলীগ কর্মী ও ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষার্থী তৌহিদ ও সমরেশ হোসেন ছমির। পুলিশ ও দমকাল বাহিনীর সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।  এ ঘটনায় ভেটেরিনারি কলেজের জিএস সজিবকে ছাত্রলীগের প্রতিদ্বন্দি গ্রুপ কুপিয়ে জখম করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ঘোষপাড়ায় অবস্থিত জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্কে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সমঝোতা বৈঠক চলছিল। বৈঠক শেষে ভেটেরিনারি কলেজের জিএস সজিব মটরসাইকেল নিয়ে বের হলে ওৎ পেতে থাকা ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপ সজিবকে কুপিয়ে জখম করে। সজিব মটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় এবং পুলিশের সহায়তা চাইলে ঝিনাইদহ সদর থানার পুলিশ তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌছে দেয়। এরপর ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি মুরাদ বিশ্বাসসহ ছাত্রলীগের তিন কর্মী একই মটরসাইকেলে বের হলে চলন্ত অবস্থায় তাদেরও আক্রমন করা হয়। তারা দ্রুত মটরসাইকেল চালিয়ে ১৮ মাইল নামক স্থালে পল্লী বিদ্যুতের ডিপোর সামনে পৌছালে অন্ধকারে দাড়িয়ে থাকা খুটি বোঝায় ট্রাকের (চট্রমেট্রো-চ-৮১৩৪৫৪) সাথে ধাক্কা খায়।

ঘটনাস্থলেই নিহত হন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুশাবাড়িয়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে ও কলেজের ভিপি মুরাদ বিশ্বাস, তৌহিদুল ইসলাম ও সমরেশ হোসেন ছমির।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের উপ পরিচালক মোঃ শামীমুল ইসলাম জানান, নিহতদের মাথায় আঘাত লেগেছে। মটরসাইকেল ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। মুলত হামলাকারী ও হতাহত সবাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের সদস্য বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরান জানিয়েছেন, যে গ্রুপই হামলা করুক এটা অন্যায় ও অমানবিক হয়েছে। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ভিপি ও জিএস তার সঙ্গেই রাজনীতি করেন, তারা অন্য গ্রুপ করেন না। তিনি বলেন কারা হামলা চালিয়েছে তা নিশ্চত করে বলা যাচ্ছে না।

ঝিনাইদহ সদর থানর ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, ছাত্রলীগের এক গ্রুপের ধাওয়া ও হামলায় প্রথমে সজিব আহত হন। তার হাতে কোপের দাগ আছে। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিনজনকেও একই ভাবে ধাওয়া করে। হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে তারা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ তৌফিক হাসান জানান, নিহত তিনজনের মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে। এছাড়া হামলায় আহত সজিবের অবস্থা ভালো আছে। তার বাম হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে।