ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপা অংশে রাস্তা সংস্কারে অনিয়ম

ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপা অংশে রাস্তা সংস্কারের কাজে ব্যাপক অনিয়ম দেখা গেছে। ৭ মাস পর সংস্কার কাজে ফিরে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়ক সংস্কার করছে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহসড়কের শৈলকুপার ভাটই বাজার এলাকায় এই কাজ করা হচ্ছে।

তবে ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে জানা যায়, বড় গর্ত সংস্কারে তাদের কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। এই জন্য ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের অনুমতি নিয়ে খোয়া দিয়ে কাজ করছেন।

অন্যদিকে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কাজের সুপারভেশন ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সারোয়ার জানান, তারা এ ধরনের কোন অনুমোতি দেননি বরং ঐ অংশের কাজ বন্ধ করতে বলেছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৭ মাস পর কাজে ফিরে যেনতেন ভাবে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে। ৭ মাস আগে কাজ শেষ করলে রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হতো না। তারপরও ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ দুই ঈদের আগ থেকেই ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাস্তার মেরামত কাজ অফিসের গাড়ি, ইট, পাথর, খোয়া, পিচ, জনবল ও মালামাল ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের আলহেরা, হামদহ ও কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপার পর্যন্ত সংস্কার কার্যাদেশ পায় ঢাকার আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন ফার্ম। কাজ শুরুর পর থেকেই তারা অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করে। এ নিয়ে কাজ বন্ধসহ কয়েকবার মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। এরপর মার্চ মাসে করোনাকালীন কাজ বন্ধ করে ৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকার বিল নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চলে যায়। দীর্ঘ ৭ মাস সংস্কারের কাজ বন্ধ থাকার পর সড়ক বিভাগ একের পর এক চিঠি দিয়ে শেষ পর্যন্ত গত মাস থেকে সড়ক সংস্কারে ফেরে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন ফার্ম।

ভাটই বাজারের ব্যবসায়ী ইমরান এন্টারপ্রাইজের মালিক ইমরান হোসেন অভিযোগ করেন, ৭ মাস কাজ বন্ধ থাকার সংস্কারের যে কাজ করা হচ্ছে তা খুবই নিম্নমানের। এবার পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এই মহাদুর্নীতির মাধ্যমে একটি দেশ চলতে পারে না।

শৈলকুপার ভাটই এলাকার নাকোল গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, ২০ কোটি টাকার সড়ক সংস্কার যদি পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে হয় আর এটা দেখার কেউ না থাকে তা হলে এর থেকে দু:খজনক ঘটনা আর কি হতে পারে?

আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন ফার্মের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বড় বড় গর্ত সংস্কারে তাদের কোন অর্থ বরাদ্দ নেই এ কারণে তারা গর্তে ইটের খোয়া দিয়ে তার উপর পাথর দিচ্ছেন। আর এ কাজটি তারা ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমতি নিয়েই করছেন। তাদের কাজে কোন রকম দুর্নীতি নেই। সবই সিডিউল মোতাবেক করা হচ্ছে।

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার জানান, মহাসড়ক সংস্কারে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দেওয়ার কোন বিধান নেই। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ইটের খোয়া দিয়ে সড়ক সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদের এ কথা ঠিক না। বরং যে স্থানে তারা এ কাজ করছে সেখানে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।