ঝিনাইদহ-১ আসনের ফুলকপি এখন ট্রাকে!

ঝিনাইদহ-১ আসনের ফুলকপি এখন ট্রাকে!

খবরের শিরোনাম দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন ফুলকপি হয়তো ট্রাকে বহন করা হচ্ছে। কিন্তু আসলে বিষয়টি তেমন নয়।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা উপজেলা) আসনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিক ফুলকপি ও ট্রাক। প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই প্রার্থী হলেন স্বামী আর স্ত্রী। বাড়ির মধুর সম্পর্ক এখন ভোটের মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে স্বামী-স্ত্রী দুজনা মাঠে নামলেও, ভোট চাওয়ার কৌশল ভিন্ন।

আর আলোচিত এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি স্বতন্ত প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল ও তার স্ত্রী মুনিয়া আফরিন। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম পেয়েছেন ট্রাক প্রতীক। অন্যদিকে স্ত্রী মুনিয়া আফরিনের প্রতীক ‘ফুলকপি’।

নির্বাচন প্রচারাভিযানে গিয়ে বুধবার সরজমিন দেখা যায় নিজে প্রার্থী হলেও স্বামী নজরুল ইসলাম দুলালের পক্ষে ভোট চাইছেন স্ত্রী মুনিয়া আফরিন। দিনরাত করছেন উঠান বৈঠক। স্বামীর পক্ষে ভোট চাওয়া স্ত্রী মুনিয়া আফরিনের এমন কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

শৈলকুপার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় স্বামীর ট্রাক প্রতীকের পোস্টার বিলি করে ভোট চাচ্ছেন মুনিয়া আফরিন। মুনিয়া আবার স্বামীর ট্রাক প্রতিক প্রদর্শন করে ছবিতে পোজ দিচ্ছেন।

লাঙ্গলবাঁধ এলাকার রহিমা বেগম নামে এক নারী জানান, মুনিয়া নিজে প্রার্থী তবুও স্বামী নজরুল ইসলামের জন্য ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন স্ত্রী। এটার কারণ ও রহস্য কি তা আমরা জানি না। জীবনে কোনদিন শুনি নাই যে, নিজের প্রার্থীতা বিসর্জন দিয়ে অন্যের জন্য কাজ করতে।

কমলা বানু নামে ধলহরাচন্দ্র এলাকার এক গৃহবধু জানান, স্বামীর প্রতি মুনিয়ার এই ভালোবাসা ও প্রার্থীতা কোরবানীর দৃশ্য ভোটারদের কাছে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। কি কারণে এমনটি তিনি করছেন তা ভোটারদের দিনকে দিন কৌতুল করে তুলেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোট কেন্দ্রে এজেন্টদের সংখ্যা বাড়ানো ও কেন্দ্র দখলের কোন উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। কারণ একটি বুথে স্বামী স্ত্রীর পক্ষে দুই প্রতিকের নামে একাধিক এজেন্ট দিতে পারবেন তারা। আর এমনটি হলে বুথে তাদের অবস্থান ভাল থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনিয়া আফরিন জানান, ‘আমি নিজের জন্য প্রচারণা করছি, সঙ্গে স্বামীর পক্ষেও। প্রথম দিনে শৈলকুপার ভাটই এলাকায় নারীদের কাছে স্বামীর জন্য ভোট চেয়েছি। শৈলকুপার হাবিবপুর গ্রামে করেছি উঠান বৈঠক’।

তিনি বলেন, ‘স্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব আছে। আমি নিজের পাশাপাশি স্বামীর জন্যও মানুষের কাছে যাচ্ছি। ভোটাররা যাকে পছন্দ করবেন তাকেই ভোট দেবেন। এদিকে নিজে প্রার্থী হয়ে স্বামীর পক্ষে স্ত্রীর এই প্রচরণায় শৈলকুপা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বিরোধীরা বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছেন এবং তবে ভোটারদের কাছে কৌতুহলের জন্ম দিচ্ছে।