ঝুলে আছে ৬৭৮ প্রকল্প

২২ বছরেও শেষ হয়নি সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্কের কাজ * ১২ বছর ধরে চলছে ৩টি, ১১ বছর ধরে ৫টি, ১০ বছর ধরে চলছে ৭টি প্রকল্প * সংশোধন বা মেয়াদ বৃদ্ধি ছাড়া নতুন অর্থবছরে টাকা খরচে নিষেধাজ্ঞা
১৯৯৯ সালের ১৭ জুনে এ গল্পের শুরু। সেদিন অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ বোর্ড সভায় তৎকালীন সরকার সিরাজগঞ্জে একটি শিল্পপার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। তখন থেকেই শুরু হয় প্রকল্প তৈরির কাজ। এরপর চলে গেছে প্রায় ২২ বছর। দীর্ঘ সময়ে সরকার বদল হয়েছে। সে সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকার এখন ক্ষমতায়। কিন্তু প্রকল্পটির কাজ আজও শেষ হয়নি।

শুধু সিরাজগঞ্জে শিল্পপার্কই নয়, বিভিন্ন অর্থবছরে নেওয়া ৬৭৮টি উন্নয়ন প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। উন্নয়নের নামে নেওয়া প্রকল্পগুলো ঝুলে আছে বছরের পর বছর। যথাসময়ে কাজ শুরু হয়েছে কিন্তু শেষ হচ্ছে না। বছর যাচ্ছে বাড়ছে মেয়াদ, সঙ্গে ব্যয়ও। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য দফায় দফায় নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী তেমন কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে প্রকল্পের গল্প আর শেষ হয় না। প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতি, উদাসীনতা এবং জবাবদিহিতার অভাবের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী যুগান্তরকে বলেন, যেসব প্রকল্প দেরি হয় সেগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোড়ায় গলদ থাকে। অর্থাৎ ‘প্রজেক্ট’ তৈরির সময়ই সম্ভাব্যতা যাচাই হয় না, ডিজাইন ঠিকমতো হয় না, সঠিক রেট শিডিউল ধরে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় না। বাস্তবায়ন পর্যায় গিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। সেই সঙ্গে কোনো পর্যায় থেকেই সঠিক তদারকি থাকে না। অনেক সময় মন্ত্রণালয়গুলো বিমাতাসুলভ আচরণ করে। অনেক সময় মন্ত্রণালয় এগুলো ‘ওন’ করতে চায় না, ফলে দেখা যায় বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। এতে ময়াদ বাড়ে, সেইসঙ্গে বাড়ে ব্যয়ও। একদিকে অর্থের অপচয়, অন্যদিকে জনগণ সুফল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত বা ডিপিপি তৈরিতে ভুল করায় কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তি হয়েছে বলে শুনিনি।

সিরাজগঞ্জের গল্পটা হচ্ছে-সে সময় সয়দাবাদ এলাকায় বিসিক ১৯৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্প তৈরি করে। ১৯৯৯ সালের জুলাই থেকে ২০০৪ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ‘বিসিক শিল্পপার্ক, সিরাজগঞ্জ’ শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি ১৯৯৯ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদনও দেওয়া হয়। এর মাঝে সরকার পরিবর্তন হয়। নতুন সরকার এসে ২০০৪ সালের ৩০ এপ্রিল শিল্প মন্ত্রণালয় শিল্পপার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে বড় ধাক্কা খায় কাজটি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ফের সিরাজগঞ্জে শিল্পপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন সংস্থাপন ও প্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ২০০৯ সালের ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় সিরাজগঞ্জ শিল্পপার্কের জন্য একটি উপযোগী স্থান নির্ধারণের উদ্দেশ্য সমীক্ষা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট একনেক সভায় প্রকল্পটি নতুন করে অনুমোদন হয়।

সূত্র জানায়, ‘বিসিক শিল্পপার্ক সিরাজগঞ্জ’ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী জুনে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হচ্ছে না। দীর্ঘ দিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় কাজটি তারকা চিহ্ন দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে নতুন এডিপিতে। এর মূল ব্যয় ছিল ৩৭৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

কিন্তু সর্বশেষ সংশোধনীর মাধ্যমে করা হয় ৭১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। এতে তিনবার ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৪৮৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ৬২৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। তৃতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ৯১ কোটি ১১ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৭১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা।

একই চিত্র দেখা গেছে মেয়াদের ক্ষেত্রেও। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে এক বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। পরে ব্যয় না বাড়িয়ে আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। এর মধ্যেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় দ্বিতীয় সংশোধনীর সময় ৩ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল।

তৃতীয় সংশোধনীতে ২ বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। সর্বশেষ প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছিল পিডব্লিউডি রেট শিডিউল ২০১৮ অনুযায়ী মাটি ভরাট কাজ ছাড়াও অন্যান্য পূর্ত ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে অত্যাবশ্যকীয় কয়েকটি নতুন অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (পরিকল্পনা) ড. মো. আল আমিন সরকার যুগান্তরকে বলেন, প্রথম দিকে কী সমস্যা ছিল সেটি আমি বলতে পারব না। তবে দরপত্র পদ্ধতি সংক্রান্ত কোনো জটিলতায় হয়তো দেরি হতে পারে। তবে আমি ২০১৯ সালের মার্চে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার পর থেকে কোনো জটিলতা নেই।

এখন অগ্রগতিও ভালো। তবে জুনের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না। আরও এক বছর মেয়াদ বাড়াতে হবে। আশা করছি বর্ধিত সময়ের মধ্যে অবশ্যই এটির বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। তিনি আরও জানান, এখন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সার্বিক এডিপি বাস্তবায়ন অনেক ভালো। গত অর্থবছরর কোভিডের মধ্যেও ৯৯ দশমিক ১৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

বিভিন্ন অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের অবস্থা খুবই করুণ। এর মধ্যে ১৬৮টি প্রকল্প আছে পাঁচ থেকে ১২ বছরের বেশি সময় আগে নেওয়া। যেগুলোর কাজ এখনও শেষ হয়নি। এর মধ্যে এক যুগ ধরে চলছে তিনটি, ১১ বছর ধরে চলছে পাঁচটি এবং ১০ বছর ধরে চলছে সাতটি।

আট থেকে নয় বছর ধরে চলছে ২৯টি, ছয় থেকে সাত বছর ধরে চলছে ৫৮টি। ৫ বছর ধরে চলছে ৬৬টি উন্নয়ন প্রকলেগুর কাজ। বাকি পাঁচ শতাধিক প্রকল্পের কাজও বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না। এগুলোর মেয়াদ আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ঝুলে থাকা প্রকল্পগুলো বিশেষ চিহ্ন (তারকা) দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তবে এগুলোর ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় অর্থছাড় বা ব্যয় করা যাবে না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠক থেকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্টদের মতে এ সময়ে এসে প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন করতে গেলে সময় লাগবে। এতেই পার হয়ে যাবে কয়েক মাস। সেক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরের শেষে কাজ শুরু হতে পারে। বছর শেষে এগুলোর কাজ অসমাপ্তই রয়ে যাবে।

আইএমইডির মতে, প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার বেশ কিছু কারণ দীর্ঘদিন ধরেই বিরাজমান। যেমন সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরিতেই দুর্বলতা ও দক্ষতার অভাব অন্যতম। এছাড়া যেনেতেনভাবে প্রকল্প তৈরি, বাস্তবায়ন পর্যায়ে কার্যকর তদারকির অভাব, নিয়মিত ও কার্যকরভাবে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) এবং পিএসসি (প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটি) বৈঠক না হওয়া।

সেই সঙ্গে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা, বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের সময়ক্ষেপণও দায়ী। পাশাপাশি রয়েছে প্রয়োজনীয় অর্থছাড় না হওয়া, প্রকল্প পরিচালকদের অদক্ষতা, ঘন ঘন পরিচালক বদলি ইত্যাদি। এছাড়া সর্বশেষ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কোভিড-১৯জনিত পরিস্থিতি।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, প্রকল্প নেওয়ার সময় সংশ্লিষ্টদের যতটা আগ্রহ থাকে পরবর্তীতে সেটি আর থাকে না। কারণ প্রকল্প থেকে গাড়ি কেনা, পণ্য কেনাকাটা, বিদেশ সফর ইত্যাদি শেষ হলে তখন অন্য কোনো কোথাও যাওয়ার সুযোগ খোঁজেন কর্মকর্তারা।

ফলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কত হলো, কিংবা আদৌ শেষ হবে কিনা সেসব বিষয়ে তাদের মাথাব্যথা থাকে না। এক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো জবাবদিহিতা না থাকা। ফলে যে যার মতো সুবিধা নিচ্ছেন, চলে যাচ্ছেন আবার আসছেন। এক্ষেত্রে ব্যক্তির পাশাপাশি সিস্টেমও দায়ী।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব ভবন নির্মাণ প্রকল্পের অবস্থাও শোচনীয়।

এটি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু সেটি না হওয়ায় তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এর মধ্যেও শেষ না হওয়ায় পরবর্তীতে দুই দফায় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে আবারও মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এরই মধ্যে ঠিকাদার জি কে শামীম গ্রেফতার হওয়ায় এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। মূল ব্যয় ১৪১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা হলেও শেষ পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এখন চলছে প্রকল্পটি। তবে গত বছরের জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

প্রকল্পের মূল অনুমোদিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুযায়ী ২০ তলা ভিত্তি ও ২টি বেজমেন্টসহ ১২ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের সংস্থান ছিল। পরবর্তীতে সংশোধিত ডিপিপিতে কোনো রকম চিন্তাভাবনা না করেই ৩০ তলা ভিত্তি ও ২টি বেজমেন্টসহ ১২ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

কিন্তু প্রকল্প এলাকা শেরেবাংলা নগরে ১৫০ ফুটের বেশি উচ্চতাবিশিষ্ট ভবন বা টাওয়ার নির্মাণের ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ নিয়েও পরবর্তীতে তৈরি হয় জটিলতা। এখন ১২ তলা হলেও বেজমেন্টে তৈরিতেই বিপুল অংকের অর্থ খরচ হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক লুৎফুল আজীম যুগান্তরকে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সকে বাতিল করে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ। এখন চলছে ফিনিশিং কার্যক্রম। আশা করা যাচ্ছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই অফিস শিফটিং শুরু করা যাবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা কয়েকটি প্রকল্প হচ্ছে-কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ স্থাপন সংক্রান্ত একটি। এটি চলছে ২০০৯ সাল থেকে। কবে শেষ হবে জানে না কেউ। এটির গোড়ায় গলদ ছিল। ছিল ব্যাপক অনিয়মও। সর্বশেষ সংশোধনীর জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হলে ক্ষুব্ধ হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি এটি তদন্তের নির্দেশ দেন। বর্তমানে আইএমইডির তদন্ত প্রতিবেদন জমা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। এছাড়া জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা শীর্ষক প্রকল্পটি ২০০৯ সালে শুরু হয়ে ইতোমধ্যেই দু’বার সংশোধন করা হয়ছে। আগামী জুন মাসে শেষ হচ্ছে মেয়াদ। খুলনা জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১ সালে।

একবার সংশোধনের মাধ্যমে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ করা হয়েছে। এ সময়ও শেষ হয়ে যাচ্ছে। ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। ২০১৩ সালে শুরু হয়ে এখনও চলছে। মাঝে সংশোধন করা হয়েছে । প্রি-পেমেন্ট মিটারিং ফর ডিস্ট্রিবিউশন কুমিল্লা অ্যান্ড ময়মনসিংহ প্রজেক্টটি চলছে ২০১৩ সাল থেকে।

সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে ২০১১ সাল থেকে। ২০১০ সাল থেকে কাজ চলছে খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন প্রকল্প চলছে ২০১১ সাল থেকে। ২০১০ সাল হতে বাস্তবায়ন হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারের কাজ (নতুন ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম)।

এটি দুইবার সংশোধন করাও হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে বাস্তবায়ন হচ্ছে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্প। ফের সংশোধনী প্রস্তাব পড়ে আছে পরিকল্পনা কমিশনে।

জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী যুগান্তরকে বলেন, কাজগুলো যথাসময়ে শেষ না হওয়ার পেছনে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতা অবশ্যই আছে। তবে এনইসি বৈঠকে তারকা চিহ্নিত এসব প্রকল্প দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

সুত্র-যুগান্তর