ট্রাম্প-মেলানিয়ার করোনা: কী হবে নির্বাচনী বিতর্কের?

কোভিড-১৯ কে শুরু থেকে গুরুত্ব না দেয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বৈশ্বিক এই মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে তার সঙ্গী হয়েছেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও।
ট্রাম্প এমন সময় করোনায় আক্রান্ত হলেন যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র এক মাস বাকি। ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় দেশটির গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের বহু কাজ এখনও বাকি। বেশ কয়েকটি প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট রয়েছে তার সামনে। কয়েকটি নির্বাচনী র্যা লিরও শিডিউল দেয়া।

ট্রাম্প-মেলানিয়া কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় এগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিল। শুধু তাই নয় নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা হোপ হিকসও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্প কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় আগামী ১৫ অক্টোবর ফ্লোরিডার মিয়ামিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দ্বিতীয় টেলিভিশন বিতর্কের কী হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র এক মাস। ভোট সামনে রেখে গত কয়েক সপ্তাহে নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী সফরে যাচ্ছিলেন ট্রাম্প।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই তিনি হাজারো মানুষের ভিড়ের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির বিভিন্ন নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দিচ্ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার যেভাবে এই মহামারী সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তা নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা- দুদিক দিয়েই বিশ্বে এখন সবার উপরে যুক্তরাষ্ট্র।

সেখানে এ পর্যন্ত ৭২ লাখের বেশি মানুষের কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। দুই লাখের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে।

ট্রাম্প কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট বা প্রার্থীদের মধ্যকার বিতর্ক চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল। এমনকি চূড়ান্ত সময়ে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারও বাধাগ্রস্ত হলো। কতদিন আইসোলেশনে থাকবেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি ট্রাম্প। তিনি গত কয়েক দিন ধরে নিয়মিতই করোনা পরীক্ষা করাচ্ছিলেন। কিন্তু কোনো রিপোর্টেও তার করোনা ধরা পড়েনি। শেষ পরীক্ষায় তার করোনা ধরা পড়ল।

জানা গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে তাকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করছিলেন উপদেষ্টা হিকস। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রমণ করেছেন। এমনকি মঙ্গলবার ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের প্রথম বিতর্কেও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গী হয়েছিলেন।

বুধবার হেলিকপ্টার মেরিন ওয়ানে চড়তেও ট্রাম্পের সঙ্গী ছিলেন ৩১ বছর বয়সী হিকস। এদিন মিনোসোটায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন ট্রাম্প। সেখানে একই বিমানে করে যান ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা হিকস, কুশনার, ড্যান স্ক্যাভিনো ও নিকোলাস লুনা। তাদের কেউ-ই মাস্ক পরা ছিলেন না।

এ বিষয়ে ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেন, হিকসের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে, আমি এই মাত্র শুনলাম। সে নিঃসন্দেহে একজন পরিশ্রমী। সে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করত। বহু মাস্ক সে পরেছে। তবু তার করোনা ধরা পড়েছে। এর পরই আমি করোনা টেস্ট করাই। এখন রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। আমরা একসঙ্গে বহু সময় কাটিয়েছি। ফার্স্ট লেডিও পরীক্ষা করিয়েছেন।
হিকসের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, সে নি:সন্দেহে অসাধারণ।

ট্রাম্পের সমর্থকরা মনে করছেন হিকসের থেকেই সংক্রমিত হয়েছেন ট্রাম্প। কারণ ট্রাম্পের নির্বাচনী র্যা লিগুলোতে মূল দায়িত্ব পালন করেছেন ৩১ বছর বয়সী এই নারী। তিনি ট্রাম্পের সমর্থকদের সঙ্গে মিশেছেন।

এ বিষয়ে ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেন, সে উষ্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সে সব কিছু ভালোভাবেই সামলেছে। সমর্থক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারাই র্যা লির সময় কাছাকাছি ঘেঁষার চেষ্টা করেছে, সবাইকে সে সামলেছে। সে কাউকে দূরে ঠেলে দেয়নি।

ট্রাম্প মেলানিয়া ও হিকস করোনায় ধরাশায়ী হওয়ায় ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার নিয়েই এখন বড় ধরণের অনিশ্চয়তা দেখা দিল।
সূত্র- যুগান্তর