ডেকে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা, আ.লীগ নেতাকে গণধোলাই

ভালো উকিল দিয়ে জমির মামলায় জিতিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে ডেকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুল হক মোমিন মাস্টারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।

শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ভগিরথপুর গ্রামের একটি ফাঁকা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কনডম উদ্ধার করেছে।

অভিযুক্ত মোমিনুল হক মোমিন ওরফে মোমিন মাস্টার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং নতিপোতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি উপজেলার মসজিদল পাকার ছেলে।

পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গেছে, মোমিনুল হক বর্তমানে গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দামুড়হুদা উপজেলা শহরে বসবাস করেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ভগিরথপুরের আলিহিমের ফাঁকা বাড়িতে এক নারীর চিৎকার চেঁচামেচি শুনে এলাকার লোকজন ছুটে যান। এসময় মোমিন মাস্টারকে গণধোলাই দিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন।

এতে তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তাকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নেওয়া হয়। এ সময় থানায় নেওয়া হয় একই উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামের ওই নারী ও তার স্বামীকে।

ভগিরথপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী ইলিয়াছ হোসেন জানান, রাতে মরাগাং বাঁওড় পাহারা দিতে আমি ও অরও হালদার নৌকা নিয়ে যাই। পরে ওই মেয়ের চিৎকার শুনে সেখানে যাই। সেখানে মোমিন মাস্টারকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখি। তার হাতে একটি জন্মবিরতিকরণ কনডম ছিল।

ওই মেয়ের চিৎকারে তার স্বামীসহ স্থানীয়রা এসে মোমিন মাস্টারকে মারধর করে।

তিনি বলেন, মোমিন মাস্টার ভালো হলে সন্ধ্যায় ফাঁকা বাড়িতে এক নারীকে নিয়ে তিনি কী করছিলেন? তিনি তো দামুড়হুদায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন।

বেড়বাড়ি গ্রামের ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার চাচাদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মোমিন মাস্টার ভালো উকিল দিয়ে মামলায় আমাদের জিতিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দেয়।
উকিল এসেছে বলে সন্ধ্যায় আমি ও আমার স্বামীকে ভগিরথপুর গ্রামের আলিহিমের বাড়ি ডাকে মোমিন মাস্টার। মোমিন মাস্টার আমার স্বামীকে চা খেতে বাইরে যেতে বলে।

পরে ঘরের দরজা আটকে মোমিন মাস্টার আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণচেষ্টা করে। আমি চিৎকার দিলে আমার স্বামী ও স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি তার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোমিন মাস্টার জানান, আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসাতে ওই নাটক সাজানো হয়েছে। আমি রাজনীতি করি। আমার প্রতিপক্ষ এ কাজ করেছে। ওই মেয়ের চাচা আমাকে তার কাজ করে দিতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু আমি অসহায় ভেবে কাজ করে দিতে চেয়েছিলাম। আমাকে হত্যাচেষ্টার মর্মে আমিও থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবদুল খালেক জানান, উভয়পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।