
যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ত্রয়োদশ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মঝে বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। আগামী বছর ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম প্রান্তিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এলক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তুতি নিতে রাতদিন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে ২৩৭ জন এবং ৩৬জনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। সেই তালিকায় ঝিনাইদহ জেলার মাত্র ১টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকী ৩টি অসনের প্রার্থীর নাম চুড়ান্ত না করায় বিএনপির মধ্যে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির মধ্যে এই বিষন্নতা বেশি দানা বাধার কারণ হলো সমমনাদের নিয়ে জোটগত ভাবে নির্বাচন করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে।
চুড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা না হলেও অনেকে মনে করছেন স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের সময় যুগপথ আন্দোলনের শরিক বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে এই আসনটি ছেড়ে দিতে পারে। আবার বিএনপি তৃনমূল নেতা কর্মীরা মনে করেণ ঝিনাইদহ-২ আসনটি জেলার রাজনীতিতে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে, ফলে নমিনেশন যদি অন্য দলকে দেয়া হয় তাহলে জেলার রাজনীতিতে বিএনপির উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, দলে বিভক্তি রাড়বে। এমনকি এই ছিট বিএনপির হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে জামায়াতের অবস্থান ভাল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দাড়ানোর সুযোগ পেলে তিনিও পাশ করার সম্ভবনা রয়েছে। তবে বিএনপির প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে পাশের ব্যাপারে তারা শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেণ।
ঝিনাইদহ সদরের ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-২ আসন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা একাধিক থাকলেও কেন্দ্র কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। মনোনয়ন দৌড়ে এ আসন থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ প্রচার প্রচারনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে, তাছাড়া সাবেক এমপি মসিউর রহমানে ছেলে ডা: মো: ইব্রাহীম রহমান (বাবু)’র প্রচারণাও লক্ষ্য করা যায়। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অলোচনায় রয়েছে। তিনি জোটের প্রার্থী না হলেও গণঅধিকার থেকেই নির্বাচন করবেন এবং সে লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও জাতীয় নাগরিক পাটি’র (এনসিপি) মোঃ হামিদ পারভেজ মিয়া এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। সরকার পতনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ব্যাপক ভূমিকা থাকায় তাদের রাজনৈতিক দল এনসিপি নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছে। নতুন দল হলেও মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন বেকারদের কর্মসংস্থানে তারা ব্যাপক ভূমিকা রাখবেন বলে হামদি পারভেজ মিয়া দাবি করেণ। অন্য দিকে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলটির জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকর। তিনি নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে দলের নেতা কর্মীরা প্রত্যাশা করেন। তিনি প্রতিনিয়ত দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে পিআর ও জুলাইসনদের আন্দেলনের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হচ্ছেন জেলা সভাপতি ডা: মমতাজুল ইসলাম। তাছাড়া বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো: নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বছরাধিকাল ধরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচিত সহসভাপতি হিসেবে দেশের ফুটবলের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেন, ভোট গণতান্ত্রিক অধিকার রাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ছাড়া সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারেন, জনগণ যাকে বেছে নিবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। তিনি এই সরকারের অধিনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে বলে বিশ্বাস করেন। তবে এবছর নতুন ভোটাররা নির্বাচনে জয়পরাজয়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। সাধারণ ভোটারদের ধারণা শেষমেষ বিএনপি জামায়াতের মধ্যেই এই আসনে জয়-পরাজয়ের লড়াই হবে।


