তরুনদের কাছে জনপ্রিয় প্রার্থী ইমন

তরুনদের কাছে জনপ্রিয় প্রার্থী ইমন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেহেরপুর-১ (সদর-মুজিবনগর) আসন থেকে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্নভাবে জানান দিয়ে ইতোমধ্যে নির্বাচনী মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

তবে বিভিন্ন মহল থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, সংসদ সদস্য নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনের জন্য আওয়ামী লীগে থাকতে পারে নতুন চমক। এমন দাবি ক্রমেই প্রবল হয়ে উঠছে স্থানীয় নেতাকর্মীর মাঝে। তবে বৃহৎ দু’দলের ভোটের সমীকরণ যাই হোক না কেন, নতুন প্রার্থীদের আগমনী বার্তায় কিছুটা বিমর্ষ পুরাতন প্রার্থীরা।

মেহেরপুর-১ আসনে বিগত রাজনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯৭৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকেই সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন চরম পর্যায় পৌঁছেছে। সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়েছে। এর পর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কোন্দলের মাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যেও বিবাদ এখন তুঙ্গে।

জেলা আওয়ামীলীগ এখন দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীন এবং সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি বোরহান উদ্দীন আহমেদ চুন্নু, সাধারণ সম্পাদক মোমিন উদ্দীন রয়েছে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের গ্রপে। বাকী সকল নেতা কর্মী এক ছাদের নিচে।

তবে, মাঠে বেশ মজবুতভাবেই সক্রিয় রয়েছেন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা এমএএস ইমন। ইতোমধ্যে এমএএস ইমন ও তার কর্মীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন চিত্র ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন। বর্তমানে মেহেরপুর-১ আসনের তৃণমুলের নেতা কর্মীর কাছে সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন এমএএস ইমন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ মেহেরপুরের স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফোরামের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যা,সাধারণ জনগনের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে।

এছাড়া তিনি রুপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস পেট্রোবাংলার পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি হিসিবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ সম্পাদক ছিলেন, বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মেহেরপুর-১ আসন (সদর মুজিবনগর) থেকে সরকার সমর্থিত বেশ ক’জন মনোনয়ন প্রত্যাশীও রয়েছেন সরবে। এদের মধ্যে দু’একজন প্রার্থী ঈদ-কোরবানি উপলক্ষ্য করে এলাকাবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে সেঁটে দিয়েছেন রঙ্গিন পোস্টার। তবে, এ আসনে আওয়ামী লীগের পুরনো প্রার্থীর চেয়ে নবাগত প্রার্থীদের বেশ দাপটও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন নৌকার টিকিট লাভে প্রত্যাশী বলে জানা গেছে।

মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় আরও রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী, সাবেক এমপি প্রফেসর আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আসলাম শিহির। তাদের সাংগঠনিক কর্মতৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

স্থানীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শরীফ রেজা পান্না বলেন, মেহেরপুরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যক্তি ইমেজ ও নির্বাচনী মাঠে এমএএস ইমনের কোনো বিকল্প নেই। মেহেরপুরে নতুন করে কাউকে ভাবলে এবং নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অপ্রতিরোধ্য হিসেবে ইমনকেই ভাবছেন সাধারণ জনগন। ইমনের মাঠ পর্যায়ে রয়েছে বিরাট কর্মী বাহিনী। তৃনমূলে রয়েছে তার অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মী। যাদেরকে নিয়ে তিনি বলীয়ান। এই নেতা মনে করেন দল তাকে মনোনয়ন দিলে দলীয় সকল গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটাতে সক্ষম হবেন এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবেন।

মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, মেহেরপুর সদর আসনের আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটারদের কাছে ইমন ছাড়া কোনো কথা নেই। সামনের নির্বাচনে বিএনপি মাঠে থাকলে মেহেরপুরের আসনে বিএনপির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হলে ইমনকেই মনোনয়ন দিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে মনোনয়ন দিলে মাসুদ অরুনের কাছে তিনি টিকবেন না। তাই তার সাথে ভোটযুদ্ধে ইমনের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে আওয়ামী লীগের মধ্যে মত পার্থক্য আর বিভক্তি কাটিয়ে উঠতে হলে নতৃনত্ব আনতেই হবে।

পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য এএসএম ফরিদ উদ্দীন বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ও এমপি ফরহাদ হোসেনের সাথে জেলা উপজেলা, ইউনিয়ন ও তৃণমুলের কোনো নেতা কর্মীর সাথে যোগযোগ নেই। তার নিজের আত্মীয় স্বজনদের নিয়েই ব্যাস্ত সময় পার করে। তার সময়ে দলীয় কোন্দলে জর্জরিত জেলা আওয়ামীলীগ। সামনের নির্বাচনে বিএনপি এলে মেহেরপুর-১ আসনটি মাসুদ অরুনের কাছ থেকে  ছিনিয়ে নিতে হলে ইমনের কোনো বিকল্প নেই। মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগরের মানুষের সাথে এমএএস ইমনের দৈনন্দিন যোগাযোগ হয়। যার ফলে তৃণমুল মানুষের কাছে ইমন একটি আবেগের স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে এমএএস ইমন মনোনয়ন পেলে সাধারণ ভোটারদের একটি বিরাট অংশ ভোট ইমন পাবে বলে আমার বিশ্বাস।

মেহেরপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এমএএস ইমন বলেন, নতুনত্ব ও যুগ উপযোগী পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে আমি মেহেরপুর জেলাকে গড়ে তুলতে চাই। নতুন প্রজন্মকে মমত্ববোধ, ভ্রাতৃত্ববোধ নৈতিকতা ও সত্যিকারের মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী মেহেরপুরকে দেশের দ্বিতীয় স্থায়ী রাজধানী হিসেবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা। মুজিবনগরে বছরে অন্তত একটি সংসদ অধিবেশনের ব্যবস্থা করা, বেকারত্বের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া। তিনি বলেন, অবিলম্বে একটি আন্তর্জাতিক মানের পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করা, সরকারি উদ্যোগে জেলাতে একটি কৃষি ভিত্তিক কলকারখানা স্থাপনের ব্যবস্থা করা, মেহেরপুরের বিসিককে আধুনিকায়ন ও গণমুখী করা। মেহেরপুরে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা।

শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে এম এ এস ইমন বলেন, মান সম্পন্ন কারিগরী ও প্রফেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ গড়ে তোলা, মেহেরপুরে পর্যটন শিল্পের বিকাশে একটি সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা এবং মেহেরপুর কৃষি প্রধান জেলা হওয়ায় জেলাতে একটি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে কৃষি উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।