তালগাছ রোপনের আহবান কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান

প্রিয় বন্ধু একটি তালগাছ লাগিয়ে পৃথিবীকে বজ্রমৃত্যু হাতে রক্ষা করি, একটি তালগাছ লাগিয়ে পৃথিবীতে তোমার শতবর্ষের স্মৃতি চিহ্ন এঁকে দাও এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগে তাল গাছ রোপণ করে যাচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান। কৃষি অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামানের অফিসে প্রবেশের আগেই দেখা গেছে একটি সাইনবোর্ড সেখানে লেখা রয়েছে প্রিয় বন্ধু একটি তালগাছ লাগিয়ে পৃথিবীকে বজ্রমৃত্যু হতে রক্ষা করি, কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান এবং সেখানে কৃষকদের উদ্দেশ্যে লেখা রয়েছে প্রিয় কৃষক ভাই, বজ্রমৃত্যু হতে রক্ষায় বৃষ্টির সময় বড় গাছের নিচে থাকবেন না, খোলা মাঠে বা উঁচু স্থানে দাঁড়াবেন না, চামড়ার স্যান্ডেল ব্যবহার করবেন না, নদী পুকুর বা সেচ যুক্ত জমিতে থাকবেন না, ফোনে কথা বলবেন না, বিদ্যুৎ চমকানোর সাথে সাথে দুই কানে আঙ্গুল ঢুকিয়ে মাথা নিচু করে দুই পায়ের মাঝে রেখে পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে বসুন, শুয়ে পরবেন না, ধাতব পদার্থ স্পর্শ করবেন না, বজ্রপাতে আক্রান্ত রোগীকে বিদ্যুৎ শকে আক্রান্ত ব্যাক্তির ন্যায় চিকিৎসা দিন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিন। কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, তাল গাছ লাগানো এখন একটি সামাজিক ও পরিবেশ আন্দোলনের নাম এবং আমাদের সাথে তালগাছ ও বজ্র থেকে বাঁচি প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার সম্মানিত জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার মহোদয় এবং দামুড়হুদা উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার। তিনি আরও জানান, আমাদের কাছে ৮৭,৬০০ তাল বীজ আছে যার মধ্যে ২১০০ চারা রোপণ করা হয়েছে । আমরা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিনটি বিভাগে তালের চারা রোপণ করা হয়েছে তার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবন জেলায়, রাজশাহী বিভাগের নাটোর ও রাজশাহী জেলাতে, খুলনা বিভাগের যশোর, ঝিনাইদহ, এবং চুয়াডাঙ্গা জেলাতে। আর তালের চারা আমরা মূলত নদীর পাড়ে, রাস্তার পাশে, মসজিদ, মন্দির, বোদ্ধ শশান, কবরস্থান পাহাড়, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা পরিষদ সহ বিভিন্ন জায়গায় রোপণ করছি। এছাড়া আমরা কৃষকদের জন্য ৭ টি বজ্রশেল্টার তৈরি করে দিয়েছি যাতে করে যখন মাঠে কর্মরত অবস্থায় হঠাৎ ঝড়, বৃষ্টি হলে সেখানে আশ্রয় নিতে পারে এবং আমরা প্রতিদিনই কৃষকদের বজ্রৃত্যু হতে রক্ষা পেতে কি করতে হবে সে বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করে যাচ্ছি। কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান আরও বলেন, আমার স্বপ্ন আমি বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতে তাল গাছ রোপণ করবো। কারণ এই তাল গাছের কারণে একজন কৃষক বজ্রমৃত্যু থেকে রক্ষা পেতে পারে। আমি চাই না একজন কৃষক মাঠে সোনা ফলানোর সময় বজ্রপাতে মৃত্যু বরন করুক। আমি মনে করি কৃষক বাঁচলেই বাঁচবে আমার সোনার বাংলাদেশ। আমি একজন কৃষি অফিসার আমি সবসময়ই কৃষকদের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যেতে চাই। সেই সাথে আপনাদের মেহেরপুর প্রতিদিনকে ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ আজ থেকে আপনারাও আমাদের সাথে তালগাছ ও বজ্র থেকে বাঁচি প্রচারণায় অংশ নিয়ে ফেললেন কারণ আপনাদের লেখার মাধ্যমে আমার স্বপ্ন সকলের সামনে তুলে ধরলেন। এতে করে অনেকেই বজ্রপাত থেকে কিভাবে নিজের রক্ষা করা যায় জানতে পারবে এবং নিজেরাও তাল গাছ রোপণ করবে বলে আমি আশাবাদী।