
দোকানে চুরির অপরাধে সন্দেহ ভাজন তিন যুবককে পুলিশে না দিয়ে জনসম্মুখে বিচার করলেন গ্রাম্য মাতব্বররা। শালিসি সিদ্ধান্তে প্রায় ঘন্টাব্যাপী কয়েকশো মানুষের মাঝখানে বসিয়ে রেখে শাস্তি দেয়া হয় তাদের, করা হয় মারধর।
ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের। সন্দেহ ভাজন যুবকরা হলেন, হিজলবাড়িয়া গ্রামের জাব্বার আলীর ছেলে সোহেল (২৫), ফজলুর রহমানের ছেলে জমজম (২০) এবং আমিরুল ইসলামের ছেলে সোহাগ বাদশা।
জানা গেছে, হিজলবাড়িয়া বাজারের ইকরামুল হকের মুদি ও সারের দোকান ভেঙ্গে মালামাল চুরি হয় গত রবিবার রাতে। চুরির বিষয়টি সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ওই গ্রামের সোহেল কে সনাক্ত করা হয়। পরে সোহেলকে ধরে এনে একটি দোকানে আটকিয়ে মারধর করেন দোকান মালিক একরামুলের ছেলে রনি ও তার লোকজন। এক পর্যায়ে সন্দেহভাজন সোহেল ওই গ্রামের যুবক জমজম ও সোহাগ বাদশার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। দোকান মালিকের ছেলে রনি ও তার লোকজন ধরে নিয়ে আসে যুবক জমজম ও সোহাগ বাদশাকে।
দোকানে আটকিয়ে মারধর শেষে শুরু হয় গ্রাম্য শালিস করা হয় তাদের বিরুদ্ধে। এঘটনা গাংনী থানা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। দোকান মালিক একরামুল ও তার ছেলে রনির লোকজনের তোপের মুখে পড়ে ফিরে আসেন পুলিশ সদস্যরা। পরে শুরু হয় গ্রাম্য শালিস।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রিপন আলী ও স্থানীয় বিএনপি নেতা বাসিরুল আজিজও বসেন শালিসে। শতশত গ্রামবাসীরাদের মাঝখানে ঘন্টাব্যাপী বসিয়ে রাখা হয় চুরির সাথে জড়িত সন্দেহভাজন যুবকদের। পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় অভিযুক্তদের পরিবারের লোকজন তাদেরকে শালিসের মধ্যে মারধর করে নিয়ে যেতে হবে। শালিসের শেষে জনসম্মুখে মারধর করা হয় তাদের।
এ ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া শুরু হয় এলাকাজুড়ে। অনেকেই বলেন, অপরাধী হলে তাদের আইনের হাতে সোপর্দ না করে জনসম্মুখে এমন বিচার মানবাধিকার লঙ্ঘন। আবার অনেকেই বলছেন গ্রাম্য শালিস বা সামাজিক বিচার ব্যাবস্থা না থাকায় এলাকায় চুরি ডাকাতিসহ নানা অপরাধ বাড়ছে। তাই তাদের প্রকাশ্য ও জনসম্মুখে বিচার করা হচ্ছে।
দোকান মালিক রিপন আলীকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ এসেছিল, আমরা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছি, সাংবাদিকদের ডাকা হয়নি। আপনারা কেনো এসেছেন??
এবিষয়ে শালিসে থাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য রিপন আলী জানান, একরামুলের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। পরে শালিস করে তাদের বিচার করা হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি উত্তম কুমার দাস জানান, চুরির ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। এবং শালিসের বিষয়ে আমার জানা নেই।