
দেশের ঐতিহ্যবাহী চিনিকল দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানি’র প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ থাকা শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবরোধ এবং অবস্থান ধর্মঘট চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭ টা থেকে চলমান এসকল কর্মসূচির মধ্যে বেলা ১০ টা থেকে মিলের জেনারেল অফিসের সামনে কয়েক’শ শ্রমিক অবস্থান নিয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রায় ৭ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে দর্শনা থানার ওসি তদন্ত সুলতান মাহমুদকে সাথে নিয়ে তিনি নিচে আসেন। পরে এমডি রাব্বিক হাসান বলেন, আমি আপনাদের নির্বাচন যাতে হয় সে ব্যাপারে কথা বলছি। যত দ্রুত সম্ভব আমি সবার সাথে কথা বলে নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করবো।
এসময় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেরু চিনিকলের শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি তৈয়ব আলী, সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স সহ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
একপর্যায়ে আন্দোলন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিবাদমান শ্রমিক সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। উপস্থিত পুলিশ ও সেনাসদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উল্লেখ্য একজন শ্রমিক নেতাকে অন্য চিনিকলে বদলীকে কেন্দ্র করে চিনিকলের পরিবেশ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। যার ফলে গতবছরের ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন ১১ মার্চ কেরু কর্তৃপক্ষ এক নির্বাহী আদেশে বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর নির্বাচনের দাবিতে হাইকোর্টের রিট করেন শ্রমিক পক্ষ। পরে নির্বাচনের পক্ষে হাইকোর্টের আদেশ এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কয়েকবার কেরুতে এসে পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মতামত দিয়ে যান। এর পরেও প্রায় একবছর ধরে নির্বাচন না হওয়ায় এখানকার শ্রমিক ও কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এর ফলশ্রুতিতে গত কয়েকদিন ধরে তারা লাগাতার আন্দোলন-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
শ্রমিকরা বেলা ১০ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত কেরু জেনারেল অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। দাবী না মানা পর্যন্ত ব্যাবস্থাপককে অবরুদ্ধ করে রাখে শ্রমিকরা। এ অবরুদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে কেরু এ্যান্ড কোম্পনীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, আমি নির্বাচনের বিষয়ে কেরু এ্যান্ড কোম্পনীর সদর দপ্তরকে আবহতি করেছি, তারা সিদ্ধান্ত দিলে আমি সে সিদ্ধান্ত দিব।
এ বিষয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম পিন্স বলেন, আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচী চালিয়ে যাবো।


