
চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার দর্শনা থানাধীন নেহালপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ধানের শীষ প্রতিকে ভোট চেয়ে নির্বাচনী পথসভা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির উপ-কোষাধ্যক্ষ চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান বাবু।
গতকাল শনিবার বেলা ৩ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের কোটালি, কেষ্টপুর বটতলা বাজার, ডিহি, হিজলগাড়ী, নেহালপুর, নেহালপুর পশ্চিমপাড়া, বোয়ালিয়া, কুন্দিপুর ও দোস্তে গ্রামে এসব নির্বাচনী পথসভা করেন।
স্ব-স্ব ওয়ার্ড কমিটির সভাপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিগত দিনে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকায় কি হয়েছে সেটা আপনারা সবাই জানেন। আমি সে বিতর্কে যাব না। আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মার্কা ধানের শীষ মার্কা। আপনারা সবাই ধানের শীষে ভোট দিবেন। কেন দিবেন ? এই জন্য দিবেন, দেশ পরিচালনায় একমাত্র যোগ্যদল বিএনপি। আমাদের দলটি রাষ্টিয় ক্ষমতায় এবং বিরোধী দলে থেকেও রাষ্ট পরিচালনা করেছে। তাই রাষ্ট পরিচালনার ক্ষমতা একমাত্র বিএনপি’রই আছে।
মানুষের জীবযাত্রার মান উন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য আপনারা অবশ্যই ধানের শীষের প্রতীকে ভোট দিবেন। আমি কোন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে পারব না। আমার সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব সেটুকু করার চেষ্টা করব। রাষ্টগঠণে তারেক রহমান ৩১ দফা ঘোষনা করেছেন। যেখানে ধর্ম নিয়ে বলা হয়েছে- ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংবিধানস্বীকৃত সকল অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। বিগত সময়ে সংখ্যালঘুদের মন্দির, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা কিংবা স¤পত্তি দখলের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রæতি দিয়েছে বিএনপি।
তরুণদের নিয়ে বলা হয়েছে, তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে যুগোপযোগী জাতীয় যুবনীতি প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত বেকার ভাতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বেকারত্ব দূর করতে বহুমুখী ও বাস্তসম্মত কর্মসূচি গ্রহণ এবং তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশের বিপুল যুব জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনশীল সম্পদে রূপান্তরীত করার লক্ষ্য রয়েছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুষ্টি খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে যুবসমাজের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। কৃষি নিয়ে বিএনপি’র ভাবনা হলো কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ধান-গমসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের সরকারি ক্রয়কেন্দ্র প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কৃষিজমির অহেতুক অকৃষি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হবে এবং কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের গবেষণা ও উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র এই ৩১ দফা রূপরেখা কেবল সরকার পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নয় বরং রাষ্ট্র পরিচালনার প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ দিক জুড়ে একটি ব্যাপক সংস্কার পরিকল্পনা। সংবিধান ও রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তন থেকে শুরু করে অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রযুক্তি প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের একটি খসড়া কর্মসূচি এখানে দেওয়া হয়েছে। এগুলোর উদ্দেশ্য হলো, বিএনপির ভাষায়, গুণগত পরিবর্তন এনে দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। তাই আপনাদের প্রতি আমার উদ্যাত্ত আহবান মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। এক দল অতীতে কি করে গেছে সেটা যেমন জানেন তেমনি আর একটি দল ক্ষমতায় আসার জন্য নানা ভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। দল বা কোন মার্কার উপরে পরকালে ভাগ্য নির্ধারণ হবে না। এটা যারা বলছেন তারা আপনাদের সাথে মিথ্যা কথা বলছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র সাংগাঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, দর্শনা থানা বিএনপি’র সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আহম্মদ আলী, সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন, যুগ্নসাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম যুদ্ধ, সাংগাঠনিক সম্পাদক মহিদ জোযার্দ্দার, নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ফরজ আলী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি মাসুদ রানা, যুগ্নসাধারণ সম্পাদক আবুসালেহ মেম্বর, সাংগাঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। দর্শনা থানা যুবদলের আহবায়ক জালাল উদ্দিন লিটন, সদস্য সচিব সাজদেুর রহমান মিলন, যুবদল নেতা হিজলগাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মেহেদী হাসান মাষ্টার প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন, জহুরুল ইসলাম, নুরননবী, ছানোয়ার হোসেন, জলিল উদ্দিন, আমজেদ হোসেনসহ ৯টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা।


