দর্শনা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কাউন্সিলর মিকার সংবাদ সম্মেলন

দর্শনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবির হোসেন মিকার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার প্রতিবাদে দর্শনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দর্শনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন দর্শনা পৌর কমিশনার সাবির হোসেন মিকা।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দর্শনা পৌরসভার কর্মচারীবৃন্দ আমার বিরুদ্ধে অনৈতিক আইন বর্হিভূত একটি মানববন্ধন করেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ষড়যন্ত্র মূলক ও পরিকল্পিত।

আমি সাবির হোসেন মিকা দর্শনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। আমার রেল বাজারের আক্তারুল ইসলাম মার্কেটের রুদ্র টেলিকমের সত্ত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠ্যানের ট্রেড লাইসেন্সের জন্য গত ১৪ জুলাই দর্শনা পৌরসভায় যান।

এসময় পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট গেলে জাহিদুল ইসলামের হোল্ডিং ট্যাক্স ও অন্যান্য কাগজপত্রাদি সঠিক থাকা সত্ত্বেও মার্কেটের মালিকের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ নেই এই অজুহাতে তার ট্রেড লাইসেন্সটি ইস্যু করে না এবং তার সাথে অসদাচরণ করে।

পরবর্তীতে ১৭ জুলাই রবিবার মার্কেট মালিক তার বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে। মার্কেট মালিক পৌর হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের পর পুনরায় ব্যাবসায়ী জাহিদুল ইসলাম আবেদন ফরম নিয়ে গেলে কোন কর্ণপাত করেনি সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলম। দর্শনা পৌরসভায় মুস্তাক নামের আরেকজন পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সের জন্য গেলে তাকেও লাইসেন্সটি প্রদান না করে তার লাইসেন্স হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

আমি দর্শনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসাবে বিষয়টি আমাকে জানালে আমি ট্রেড লাইসেন্স ইন্সপেক্টর ও সহকারী জাহিদুল ইসলামের নিকট ট্রেড লাইসেন্স না দেওয়ার কারণ জানতে চাহিলে তারা আমাকে জানান এটি সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলম লাইসেন্সটি দিতে নিষেধ করেছেন। আপনি প্রকৌশলী সাহেবের কাছে জিজ্ঞাসা করেন।

আমি জনপ্রতিনিধি হিসাবে বিষয়টি প্রকৌশলী নিকট জানতে চাহিলে তিনি আমাকে বলেন, আমার কাছে আপনাকে কে পাঠিয়েছে? আমি তখন বলি মোমিনুল ইসলাম ও জাহিদুল ইসলামের নাম বলি এবং তিনি আমাকে বলেন তাদেরকে ডেকে নিয়ে আসেন।

আমি বলি আপনি কর্মকর্তা হিসাবে আপনি তাদেরকে ডাকেন, সহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলম এই কথা বলার পর রাগান্বিত হয়ে বলেন, আমি আপনার চাকুরী করি না, আমি মেয়রের চাকুরী করি। আমি তখন তাকে বলি আপনি এই চেয়ারে বসে এইরকম অনৈতিক কথা বলতে পারেন না, আপনি জনগনের চাকুরী করেন। আপনার এই অনৈতিক কথা উর্দ্ধ করতে হবে। এই বিষয় নিয়ে তর্কতর্কী ও বাগবিতন্ডা হয়। এসময় কোন হামলা বা মারামারির ঘটনা ঘটেনি।

দর্শনা পৌরসভার একাধিক সিসি ক্যামেরা আছে যা তদন্ত করলেও সত্য উদ্ঘাটন হবে। বরং-কর্মচারীর মধ্যে কেউ কেউ লাঠি সোটা, শাবল বের করার উচ্চারণ করেন। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে হুমকী দেখায়। যা চরম দুঃখজনক। সঠিক তদন্ত করে এই সমস্ত কর্মচারী ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি ।

এই বিষয়গুলি নিয়ে বার বার মেয়রকে জানালেও তার কোন সুরাহ হয়নি। আপনারা অবগত আছেন দর্শনা পৌরসভার দীর্ঘদিন যাবৎ ৭/৮ মাস কোন মাসিক মিটিং হয় না। এডিপি কোন কাজ আসলে বা টেন্ডার আসলে সে পর্যায়ে উন্নয়নের জন্য ওপেন টেন্ডার হয় না।

মেয়র মহোদয় মনোনীত ব্যক্তিকে গোপনে টেন্ডার দিয়ে কাজ করেন, কেন মেয়র মোহদয় এমন করে তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। বারবার একই ব্যক্তিকে দিয়ে কাজ করায় যা কাজের মান অতিনিম্নমানের হয়। আমরা বিষয়টি মেয়র মহোদয়কে জানালে তিনি বলেন বিষয়টি আমার, আমি দেখব, তোমাদের এই বিষয়ে নাক গলাতে হবে না। টিআর এবং ভিজিএফ প্রজেক্টের কাজ কে বা কাহারা করে কাউন্সিলর হিসাবে আমরা অবগত নহে।

আপনারা জানেন দূর্নীতির দায়ে দর্শনা পৌরসভার ক্যাশিয়ার রোমিও পলাশ টেন্ডারের কাজ না করেই প্রায় ২০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন।

দর্শনা পৌরসভার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ১ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকার কাজটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আংশিক কাজ করে চলিয়া যায়। পৌর কর্তৃপক্ষ ও মেয়র মহোদয়কে বারবার আমরা কাউন্সিলরবৃন্দ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হলেও রহস্যগত কারণেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই ।

দর্শনা পৌরসভার ওয়ারিশ সনদপত্র বিভিন্ন সিরিয়ালে ও সিরিয়াল বিহীন পৌর প্যাডে প্রদান করেন যা আইন সংগত নহে বলে আমরা কাউন্সিলরগণ মনে করি। বিষয়টি মেয়রকে অবগত করলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেন নাই এবং বলেন এটি আমার বিষয় আমি দেখব।

জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রের সরকারি বিধিমালা উপক্ষা করে পৌর ডিজিটাল সেন্টার নামে অতিরিক্ত ৫০ টাকা ফি আদায়, পৌরসভায় মাষ্টার রুলের কর্মচারী মেহেদী হাসান কম্পিউটার অপারেটর ও উদ্যোগতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, দর্শনা পৌরসভার বিভিন্ন পুরাতন ও নতুন বিল্ডিং-এ নকশাবিহীন বিল্ডিং অনুমোদন দেওয়া। যা আইন সংগত না। এসকল বিষয় প্রকৌশলী ও মেয়র মহোদয়কে জানালে তারা বলেন এটি আমার বিষয়, এটি আমি দেখব।