
সাড়ে সাত বছর পর দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ শুক্রবার। এই নির্বাচনে ১৩টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩১ জন প্রার্থী। দেখার অপেক্ষা, কে হাসেন বিজয়ের হাসি।
সভাপতি পদে ৩ ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৫ জনসহ বিভিন্ন পদে মোট ৩১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর দর্শনা, যা শিল্পনগরী হিসেবে সারাদেশে পরিচিত। দর্শনা দোকান মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় বইছে নির্বাচনী উৎসবের আমেজ।
নির্বাচন তিন বছর অন্তর হওয়ার কথা থাকলেও এবার তা হচ্ছে দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর। আগামী ১৪ নভেম্বর শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সরব আলোচনা, আর ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।
দর্শনা বাজারের ব্যবসায়ীদের এই নির্বাচন বরাবরই এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এলাকা। বাজারের প্রতিটি অলি-গলি ও প্রধান সড়কে প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীকসংবলিত ডিজিটাল বিলবোর্ড ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলছে প্রচার।
দিনে প্রার্থীদের মাঠে তেমন দেখা না গেলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে কেউ দলবদ্ধভাবে, কেউ একাই প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রতিটি ভোটারকে হ্যান্ডবিল দিয়ে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থীরা।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। তিন বছর মেয়াদি পরিষদ হলেও বিগত কমিটি টানা সাত বছরেরও বেশি সময় দায়িত্বে ছিল। নানা জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
অবশেষে চলতি বছরের ২৫ মে গঠন করা হয় উপদেষ্টা পরিষদ এবং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৫ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক এফ.এ. আলমগীর, মোমিনুল ইসলাম ও মনির হোসেন।
গত ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর আজিজুর রহমান। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৩ অক্টোবর ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।
খসড়া তালিকা অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ৭টি ওয়ার্ডে ৭৬৯ জন। ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি, নাম ও ওয়ার্ড সংশোধন, ২৮ অক্টোবর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৯-৩০ অক্টোবর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বিতরণ, ১ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই ও আপিল শুনানি শেষে ২ নভেম্বর বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ৩ নভেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও ৪ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
১৪ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে দর্শনা ডিএস সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে গোপন ব্যালটে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে মাঠে রয়েছেন সাবেক সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন (চেয়ার), নতুনদের মধ্যে রয়েছেন লুৎফর রহমান (মই) ও তারিকুল ইসলাম জুয়েল (চশমা)।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন রতন (প্রজাপতি), সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান বাবু (চাঁদতারা), গত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী সেলিম মাহমুদ লিটন (সাইকেল) এবং নতুন প্রার্থী রিয়েল ইসলাম লিওন (ছাতা) ও নাসির উদ্দিন খান হাসু (সূর্যমুখী ফুল)।
সহসভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবুল বাসার (মোরগ), আরিফুল ইসলাম জয়নাল (কলস) ও রিন্টু জামান (মাছ)। সহসাধারণ সম্পাদক পদে আছেন আবিদ হাসান রিফাত (হরিণ) ও শরিফুল আলম (আনারস)।
কোষাধ্যক্ষ পদে সাবেক কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন (টিউবওয়েল) ও মিজানুর রহমান (দেয়ালঘড়ি)।
দপ্তর সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক সোহাগ হোসেন (টেবিল) ও কালু মিয়া (হারিকেন)।
ওয়ার্ড সদস্য পদে ১নং ওয়ার্ডে ফরজ আলী (কাঠাল) ও মো. শরিফ (পেয়ারা), ২নং ওয়ার্ডে জাহিদুল ইসলাম (মোবাইল) ও হারেজ উদ্দিন (সেলাই মেশিন), ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল ও শামীম মিয়া, ৫নং ওয়ার্ডে ওয়াসিম (ফুটবল) ও মেহেদী হাসান (বেলচা), ৬নং ওয়ার্ডে হানিফ খা (আম) ও আজিজুল ইসলাম আজিজ (পানপাতা), ৭নং ওয়ার্ডে হাবিব শিকদার (জবাফুল), সাইদুর রহমান টুটুল (উড়োজাহাজ) ও আজাহার খান ঝন্টু (চায়ের কাপ)।
এ নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান।