দামুড়হুদায় পাটের ফলন ভালো হলেও দামে হতাশ কৃষক!

দামুড়হুদা উপজেরায় পাটের ফলন ভালো হলেও বর্তমানে বাজারমূল্য নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন স্থানীয় চাষিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানো ও শুকানো নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

তবে বর্ষার ভরপুর মৌসুম হওয়ায় প্রয়োজন মত বৃষ্টির পানি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা। পাটের বীজ বপন থেকে শুরু করে আঁশ ছাড়িয়ে বিক্রির জন্য প্রস্ততু করা পর্যন্ত যে খরচ হয় তাতে করে বর্তমান বাজারদরে পাট বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে কৃষকদের। এমনটাই আশঙ্কা করছেন উপজেলার সাধারণ কৃষকরা।

দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজামান জানান, চলতি বছর দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ৬শত ৬৩ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে কম।

উপজেলার কয়েকটি এলাকায় আগাম পাটের চাষ করায় ইতোমধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। অনেকের পাট বিক্রির প্রস্ততি চলছে। অনেক স্থানে পাটের আঁশ ছড়ানোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

তবে এর মধ্যে হঠাৎ করেই গত দুই সপ্তাহ ধরে পাটের বাজার মূল্য কিছুটা কমে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। পাটের ফলন মৌসুমের শুরু থেকে বাজারে দাম ছিল মণপ্রতি তিন হাজার টাকা।

এদিকে রেজাউল ম্ষ্টার বলেন, বর্তমানে মণপ্রতি পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ টাকা। বাজার অনুযায়ী পাটের দাম আরও কমে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষক মো জালাল বলেন, পাট ঘরে তুলতে যে খরচ হয় তাতে করে বর্তমান দাম অনুযায়ী বিক্রি করলে খুব একটা লাভ আসে না। কষ্টটাই বৃথা যায়। বাজারে দাম কমে গেলে আমাদের মতো কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়বে। আমরা ফসল ঘরে তুলে মজুদ করতে পারি না। টাকার জন্য বিক্রি করতেই হয়।

মো. নজরুল ইসলাম খোকন নামে অপর এক কৃষক বলেন, শুনতাছি সামনে আরো কমবে পাটের দাম। এবার ৩০/৩৫ জন পাট পেয়েছি। দাম কমতে থাকলে লোকসান গুনতে হবে।

কার্পাসডাঙ্গা এলাকার আতিয়ার বলেন, পাটের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি করা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ দেখা দিয়েছে। মজুদ করার মতো জায়গাও নেই আমাদের।

উপজেলার অনেক স্থানেই পাট তুলে জমিতে ধানের চাষ শুরু করে দিয়েছেন কৃষকেরা। উঁচু স্থানের জমির পাট কেটে জাগ দেওয়া এবং আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে।

দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা বাজারের পাট ব্যবসায়ী আমির হোসেন ও আশরাফুল আলম আশা বলেন, গত সপ্তাহ থেকে পাটের দাম কমতে শুরু করেছে। আগে যে পাট ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন সেই পাট ২ হাজার ৪শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী মনে হচ্ছে দাম আরো কমতে পারে।

দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজামান জানান, এ উপজেলার আবহাওয়া পাট চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। এ কারণে প্রতি বছরই এখানে পাটের ফলন ভালো হয়। চলতি বছরও ভালো ফলন হয়েছে। আমরা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। বাজারে পাটের দাম ঠিক থাকলেও কৃষকদের সন্তুষ্টি।