দামুড়হুদায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিসকারের নামাজ আদায়

দামুড়হুদায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিসকারের নামাজ আদায়

দামুড়হুদা উপজেলা সদরে তীব্র তাপদাহ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেছেন সকল বয়সের ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা।

আজ শনিবার বেলা ১০ টার সময় উপজেলা সদরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে খোলা আকাশের নিচে শত শত মুসল্লিদের নামাজ আদায় শেষে মহান আল্লাহ পাকের নিকট বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

 ইস্তিসকার শব্দের অর্থ হচ্ছে পানির জন্য প্রার্থনা কিংবা বৃষ্টির জন্য দোয়া করা। তীব্র দাবদাহে আর অনাবৃষ্টির ফলে জনজীবন চরম বিপর্যয় হয়ে ওঠে, খাল- বিল শুকিয়ে যেতে থাকে, ফসলের মাঠ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জীবজন্তু পশুপাখির কষ্টের সীমা থাকেন না। এমন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেতে হয়, অতীতের গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষামা প্রর্থনায় দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করে আকুতিভরা মন নিয়ে বৃষ্টির জন্য দরখাস্ত জানানোকে ইসতিসকা নামাজ বলা হয়ে থাকে।

স্থানীয় ও মুসল্লিরা জানিয়েছেন, মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে বৃষ্টির প্রার্থনায় নামাজ আদায়ের নিদিষ্ট সময় বেলা ১০ ঘটিকা থাকলেও অনেকেই বেশ আগে ভাগেই নামাজের নিদিষ্ট স্থান দামুড়হুদা উপজেলা সদরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের মাঠে হাজির হতে থাকে। পরে নামাজের নিদিষ্ট সময় হলে মুসল্লিরা কাতারে দাঁড়িয়ে যায় এবং নামাজের ইমাম সাহেব প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নামাজের নিয়মকানুন বলেন।পরে দুরাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। ইসতিসকার নামাজ শেষে উপস্থিতি মুসুুল্লিরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে দুই হাত তুলে তীব্র দাবদাহের তাপপ্রবাহ, খরা থেকে রক্ষা করতে বৃষ্টির পানি চেয়ে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন তাঁরা।

দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ালগাছি দাখিল মাদ্রাসার ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মো: শফিকুল ইসলাম শফি জানান, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানবজীবন, পশুপাখি, গাছপালা সকলেই কষ্টের মধ্যে রয়েছেন।ফসলের মাঠ পানি শূন্যতায় রয়েছে। সেলো মেশিনের সাহায্যে পানি দিয়েও তেমন কাজ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে বৃষ্টির পানির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন কোন বৃষ্টি বাদল না থাকায় তীব্র দাবদাহের সৃষ্টি হচ্ছে।

নামাজ আদায় করতে আসা উপজেলার স্থানীয় কৃষক ও দিনমজুরদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন বৃষ্টির দেখা না থাকায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে কলের পানি উঠছেনা। পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফসলের মঠের বিভিন্ন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির অতি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। দিনমজুরের কাজ করতে জীবন শেষ হয়ে যাবার উপক্রম দেখা দিয়েছে। তবুও বসে থাকার উপায় নেই। সংসার চালাতে তীব্র দাবদাহে উপেক্ষা করে কাজ করতে হচ্ছে। তাই বৃষ্টির পানির জন্য নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে সবাই দোয়া করেছেন।আল্লাহর হুকুম হলে বৃষ্টির দেখা মিলবে ইনশাআল্লাহ।

নামাজে ঈমামতি করেন দামুড়হুদা উপজেলা মসজিদের ইমাম ও দারুসসালাম মাদ্রাসার মুহাতামিম মো: রুহুল আমিন। তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন হাসিদের আলোকে যতটুকু পাওয়া গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের ফলেই মহান আল্লাহর হুকুমে এমন অনাবৃষ্টি আর তীব্র খরা দেখা দেয়।তিনি আরও বলেন, এমন অনাবৃষ্টি আর খরা দেখা দিলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম সাহাবিদের সঙ্গে নিয়ে খোলা মাঠে ইসতিসকারের নামাজ আদায় করতেন। সে আলোকে মহান সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া ও রহমতের জন্য তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা চেয়ে দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ আদায় করতে শতশত মানুষের আগমনে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা কৃষক, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, তরুন, যুবক, কিশোর বৃদ্ধ বয়োজ্যেষ্ঠ, স্থানীয় ব্যাবসায়ী সহ সকল বয়সী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ উপস্থিত ছিলেন।