দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একজনের ২৯ দিন পর মৃত্যু

দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মহান বিজয় দিবস পালনের সময় অবৈধ লাটা হাম্বারের ধাক্কায় স্কুলের নাইটগার্ড আশরাফুল গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯দিন পর ঢাকার ইসলামিয়া হাসপাতালে গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে আশরাফুল মৃত্যু বরণ করেন।

উল্লেখ, উপজেলার লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে গত ১৬ই ডিসেম্বর একই স্কুলের নাইট গার্ড লোকনাথপুর গ্রামের মুংলা মির’র ছেলে আশরাফুল (৩০) এবং নবম শ্রেণীর ছাত্র একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সিজান (১৬) কে ইট ভর্তি অবৈধ লাটা হাম্বা দিয়ে পেছন থেকে দ্রুত গতিতে ধাক্কা দেয় একই গ্রামের রেজাউলের ছেলে সাব্বির (১৮)। ঘটনাস্থলে দুজন মারাত্মক আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিজানকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন, এবং আশরাফুল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে জানা যায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। নাইট গার্ড আশরাফুল কে ৫/৬ দিন চিকিৎসার পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। প্রায় ৪ সপ্তাহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ঢাকার ইসলামিয়া হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।

সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, মহান বিজয় দিবসে স্কুল কতৃপক্ষ ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে খোরমা বিতরণ করছিল। তখন খুরমা বিতরণে কম হয়ে গেলে ছাত্র ছাত্রীরা হট্টগোল শুরু করে। এরই একপর্যায়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে এসে স্কুলের বাইরে গেটে ছাত্র-ছাত্রীরা হট্টগোল শুরু করে। তখন পেছন থেকে ইট ভর্তি অবৈধ লাটা হাম্বা নিয়ে নাবালক অনভিজ্ঞ ড্রাইভার একই স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির পিছন দিক থেকে সজোরে হট্টগোলের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দেয়।

তখন লোকনাথপুর স্কুলের নাইট গার্ড আশরাফুল ও একই গ্রামের নবম শ্রেণীর ছাত্র সিজান গুরুতর আহত হয়। বেশ কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল মৃত্যু বরণ করলো। এভাবে মেন রাস্তায় গাড়ির আসল ড্রাইভার এবং গাড়ির মালিক থাকা অবস্থায় কিভাবে একজন নাবালক ছেলেকে গাড়ি চালাতে দিল। এলাকাবাসী আরও জানান, মেন রাস্তায় এসব অবৈধ গাড়ি যেন না চলে এবং গাড়ি গুলো যেন কোন অবস্থাতেই নাবালক ড্রাইভারদের হাতে দেওয়া না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এবিষয়ে চালক সাব্বিরের পিতা রেজাউল বলেন, আমার ছেলেই গাড়ি চালাচ্ছিল।
রাস্তার উপর ছেলেপেলে হট্টগোল করছিল,আমরা মনে করেছিলাম সবাই সরে যাবে। কিন্তু কেউ রাস্তা থেকে সরেনি। যার কারনে দূর্ঘটনা ঘটে গেছে।

এবিষয়ে নিহত আশরাফুলের পিতা মুংলা বলেন, আমর ছেলে মারা গেছে এই ব্যাপারে আমার কারো উপর কোন অভিযোগ নেই।

রবিবার বাদ জোহর লোকনাথপুর ঈদগাহ ময়দানে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় এবং লোকনাথ পুর কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন হয়।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, বিষয়টি আমর জানানেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।