
মেহেরপুরে চলতি বর্ষায় অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে ডুবে গেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রাম। প্রায় দুই মাস ধরে জলাবদ্ধতায় বন্দী হয়ে পড়েছেন এই গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। ভুক্তভোগীদের দাবী পানি নিস্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও কালভার্ট নির্মাণের। এতোদিন খোজ না নিলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন আশ্বাস দিয়েছেন অল্পদিনের মধ্যে বিষয়টি সূরাহা করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির চুলা, টয়লেট এমনকি পানির একমাত্র উৎস টিউবওয়েল পর্যন্ত পানির নিচে। রান্না করতে না পেরে কেউ কেউ শুকনো খাবারেই কাটাচ্ছেন দিন। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে চলে গেছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। এসব পরিবারের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে শিশুদের। রাস্তা পানির নিচে থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এখন আর বেরোতে পারে না। স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেমে এসেছে আশঙ্কাজনক হারে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সীমান্তবর্তী রাস্তায় কোনো কোনো কালভার্ট না থাকা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি বের হওয়ার পথ নেই।
দীর্ঘদিন পানিবন্দী থাকায় চর্মরোগসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশু। দ্রুত পানি নিস্কাশনের উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এদিকে পানির দুর্গন্ধে মশা মাছির উপদ্রব বেড়েছে কাজিপুর মিলেটারি পাড়ায়। পানিতে চলাচল করে অনেকের পায়ে দেখা দিয়েছে চর্মরোগ। তবে এখনও পানিবন্দী মানুষের পাশে দাড়াইনি সরকারি-বেসরকারি কেউ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কেউ তাদেও খোজখর না নেয়ায় হতাশ ভুক্তভোগীরা। তবে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের দাবী করেন পানিবন্দী পারিবারগুলি।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জানান, ইউনিয়ন পরিস্থিতি সমন্ধে পর্যবেক্ষণ করেছি। ইউএনও’র সাথে পরামর্শ করে এই জনদূর্ভোগ লাঘবে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহা: আলম হুসাইন বলেন, বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করেছি। খুব দ্রুতই একটি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ড্রেন ও কালভার্ট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমি মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রতিবেদকের কাছ থেকে পানিবন্দীর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত কাজিপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। অনেক পরিবারই এখনও পানিবন্দী। দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে।