দেশের দীর্ঘতম মানব সুবেল হোসেনকে  বাঁচাতে এগিয়ে আসুন

 দেশের দীর্ঘতম মানব সম্ভবত কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সুবেল হোসেন। বর্তমান বয়স তার ২২ বছর। এই বয়সেই সুবেলের উচ্চতা ৭ ফিট ৩ ইঞ্ছি।
তবে রোগে শোকে তিনি কাতর হয়ে পড়েছেন। ভুগছেন শারীরিক নানা সমস্যায়। ব্রেন টিউমার ছাড়াও তার শরীরে ফোলা রোগ রয়েছে। যার কারণে ঠিকমত চলাফেরা করতে পারেন না। দু’হাতে দুই লাঠিতে ভর দিয়ে চলেন কোনরকম। সোজা হয়ে ঠিকমত দাঁড়াতেও পারেন না। সমস্যায় পড়েন ঘরে ঢুকতে ও বের হতে।
সহায় সম্বল বেঁচে দরিদ্র পিতা মাতা সন্তানের চিকিৎসা করিয়েছেন। আর কুলিয়ে উঠতে না পেরে সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন তারা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামে সুবেল হোসেনের বাড়ি। সুবেলের বাবা ইউনুস আলী পেশায় একজন কৃষক। দরিদ্র কৃষক হওয়ার কারনে আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় ঠিকমত চিকিৎসা করতে পারেননি সুবেলের। যেটুকু করেছেন তাও সহায় সম্বল বেঁচে।
ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, যা দরিদ্র বাবার পক্ষে সে অর্থ জোগাড় করা দূরহ। তাই মনকে বুঝ মানাতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিয়ে ছেলেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন ৩বছর। ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছেন সুবেলের বাবা মা।
সুবেলের বাবা ইউনুস আলী জানান, ১২-১৩বছর পর্যন্ত সুবেলের উচ্চতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছিল। এরপর পরের ৮-৯ বছরে সে অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকে। এখন তার বয়স ২২ বছর। শারীরিক সমস্যার কারণে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়ার পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি সুবোলের।
তিনি আরো জানান, সুবেলরা দুই ভাই এক বোন। বোন সবার বড়। সুবেল মেজ। অন্য ভাই বোনের কোন সমস্যা নেই। তারা স্বাভাবিক এবং তাদের উচ্চতাও স্বাভাবিক। সুবেল এতটাই লম্বা যে লাঠিতে ভর দিয়ে ছাড়া চলাফেরা করতে পারে না। ঘরে ঢুকতে ও বেরুতে ঘরের চালা মাথা বেঁধে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। অর্থের অভাবে কিছু করতে না পেরে ছেলের জন্য কষ্ট হয়। তাই ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন সুবোলের বাবা।
সুবেলের মা কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, চিকিৎসার অভাবে সুবেল ৩বছর অসুস্থ হয়ে ঘরের বিছানায় শুইয়ে থাকে। কোনরকম হোমিও ও গাছগাছড়া চিকিৎসা দিয়ে ছেলেকে বাঁচিয়ে রেখেছি। চলাফেরা করতে পারেনা। লাঠিতে ভর দিয়ে কোনরকম চললেও বেশী সময় দাঁড়াতে পারেনা। তিনি ছেলেকে বাঁচাতে মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সহায়তা চেয়েছেন।
সুবেল জানান, আমি হাটতে পারতাম, চলতেও পারতাম। ২০১৩ সালে রোগ ধরা পড়ার পর আস্তে আস্তে মাথায় ও পায়ে সমস্যা হয়। এরপর ২০১৮ সাল থেকে হাটতে ও চলতে পারিনা। দু’হাতে লাঠিতে ভর দিয়ে কোনরকম চলি। ঘরে ঢুকতে ও বের হতে সমস্যা হয়। আবার লাঠিতে ভর দিয়ে ছাড়া বেশি সময় দাঁড়াতেও পারি না। পা ফুলে যাচ্ছে। ওষুধ খেয়ে মাথার সমস্যা একটু কম হলেও শরীরের অন্যান্য সমস্যার কারনে চলতে ফিরতে কষ্ট হয়। বাঁচার জন্য সুবেল সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
সুবেলের প্রতিবেশীরাও চায় সুবেলের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন। তারাও সুবেলের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে।
এদিকে সুবেলের উচ্চতার কারণে তাকে দেখতে প্রতিদিন মানুষের ভিড় জমে সুবেলের বাড়িতে। আর সে ভিড়ের মাঝে সুবেল বাঁচার আশার আলো দেখলেও তা তার জন্য হয়ে উঠে কষ্টের ও দূর্বিসহ। সুবেল যদি দেশের দীর্ঘতম মানব হয়ে থাকে তা’হলে সে দীর্ঘ মানবের সুচিকিৎসার মানবিক দায়িত্ব সরকার ও দেশের বিত্তবানদের। এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।