
নতুন কুঁড়ি জয় করেছেন কোটচাঁদপুরের শেখ রোদসী রায়ানা (তরিতা)। তিনি নতুন কুঁড়িতে আধুনিক গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। শনিবার ঢাকার বিটিভি ভবনে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে নৃত্য, লোকসংগীত ও আধুনিক গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন শেখ রোদসী রায়ানা (তরিতা)। তিনি কোটচাঁদপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। তরিতা ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বাবুল আক্তার টোকনের মেয়ে।
তিনি নতুন কুঁড়ির তিনটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। এরপর খুলনা বিভাগের প্রাথমিক বাছাইয়ে আধুনিক গানে সেরা ৫ জনের একজন হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে সেরা দশে জায়গা করে নিতে যাত্রা শুরু করেন তরিতা, যেখানে অংশ নেন দেশের আট বিভাগের ৪০ জন প্রতিযোগী। সব বাধা অতিক্রম করে তরিতা আধুনিক গানে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। শনিবার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা।
এদিকে তাঁর এ অর্জনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের সহপাঠী, শিক্ষক, পিতা-মাতা ও শুভানুধ্যায়ীরা।
সহপাঠীরা বলেন, তরিতার এ অর্জনে আমরা গর্বিত। আমাদের ভালো লাগছে এ ভেবে যে, আমাদের বন্ধু দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে গানে।
তরিতার পিতা বাবুল আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকেই তরিতা সাংস্কৃতিকমনস্ক। সে কারণে আমরা তাকে সবসময় সহযোগিতা করেছি। তার প্রথম হাতে খড়ি কোটচাঁদপুর মিতালী সংগীত একাডেমিতে। তিন-চার বছর বয়স থেকেই সে এখানে গান শিখছে। তার প্রথম সংগীতগুরু খাজা সামাদ উল্লাহ্ টুটুল।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান নতুন কুঁড়ি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এ বছর নতুন করে শুরু হয়েছে। তরিতা ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। আমি চাই জীবনে সে আরও বড় হোক।
তিনি জানান, তরিতা প্রথমে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছড়া গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১ম স্থান অর্জন করে। ২০২৪ সালে শিল্পকলা একাডেমি থেকে লোকগানে ‘জপলা’তে অংশ নিয়ে ১ম হয়েছিল। তবে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা এখনও শেষ হয়নি। ২০২৪ সালের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় লোকগানে জেলা পর্যায়ে ২য় স্থান এবং নৃত্যে ১ম স্থান অর্জন করে। এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ে একাধিকবার ১ম স্থান অর্জন করেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাধা রানী বলেন, তরিতার এ অর্জনে আমরা অত্যন্ত খুশি। আমি চাই তাকে দেখে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হোক এবং জীবনে এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জয়লাভ করুক।
গানের শিক্ষক খাজা সামাদ উল্লাহ্ (টুটুল) বলেন, এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সবচেয়ে ভালো লাগছে, সারা বাংলাদেশের এত সংগীত একাডেমি ও শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও কোটচাঁদপুরের মিতালী সংগীত একাডেমি থেকে শেখ রোদসী রায়ানা (তরিতা) দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমি চাই, তরিতা এই অর্জনকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে জীবনে আরও দূর এগিয়ে যাক।


