নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের সক্রিয় হিযবুত তাহরীর

নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের সক্রিয় হিযবুত তাহরীর

প্রতিবছরই তারা এই আয়োজন করলেও এবারের অনলাইন সম্মেলনের টাইমিং ও উদ্দেশ্য প্রবলভাবে প্রকাশ পেয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, নিষিদ্ধের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও হিযবুত তাহরীরের দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। আর পুলিশ বলছে, প্রচারণা থাকলেও বড় নাশকতার সক্ষমতা নেই জঙ্গি সংগঠনটির।

ঢাকার বেশকিছু ব্যস্ততম এলাকায় নতুন করে প্রচারণায় নেমেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর। ডেকেছে অনলাইন সম্মেলনও। সেই সম্মেলনের প্রচারণার পোস্টারে সয়লাব রাজধানীর বিভিন্ন দেয়াল। রাজধানীর পল্টন, সিদ্ধেশ্বরী, বাংলামোটর, রামপুরা, কলাবাগান এলাকার দেয়াল ছেয়ে গেছে নিষিদ্ধ সাংগাঠনের পোস্টারে।

এলাকার লোকজন বলছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর কোন একসময় পোস্টারগুলো লাগানো হয়েছে। তবে কারা কীভাবে লাগিয়েছে তা জানেন না স্থানীয়রা। তবে তাদের শঙ্কা, এভাবে ওরা সংগঠিত হয়ে বড় ধরনের কোন অপকর্ম ঘটানোর প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। একটি নিষিদ্ধ সংগঠন চোখের সামনে তাদের কার্যক্রম কীভাবে পরিচালনা করছে এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

এব্যাপারে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘আমি মনে করি না বিষয়টি শুধু পোস্টারিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য যে ইউনিটগুলো কাজ করছে, তাদের সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পোস্টার লাগিয়ে যখন কেউ নিরাপদে পালিয়ে যেতে পারে। তাদেরকে খুব ক্যাজুয়ালি নেওয়ার কিছু নেই, তারা বিপদজনক।’

এদিকে পোস্টার লাগানোর ১২ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কারা কোথা থেকে এসে পোস্টার সেঁটে দিয়ে গেলো সে নিয়ে কোন তথ্য নেই থানায়। কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এখনও আমি বিষয়টি অবগত নই। আমি টহল টিম পাঠিয়ে এখনই খোঁজ নেওয়ার ব্যবস্থা করছি। যদি তারা কোনো ধরনের প্রচারণা চালিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘটনা ঘটার পরে প্রতিক্রিয়া দেখানোর মধ্য দিয়ে সুরাহা করা যাবে না উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলাজি অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘অপরাধ দমনের জন্য প্রঅ্যাকটিভ ও রিঅ্যাকটিভ দুটো পদ্ধতি থাকে। আমাদের এখানে প্রঅ্যাকটিভ উদ্যোগ দেখা যায় না। আমাদের যেনো দেখতে দেখতে সয়ে যাচ্ছে। বিষয়গুলো সিরিয়াসলি দেখা দরকার। দীর্ঘমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা করে এগুলো থামানো দরকার। ভুলে গেলে চলবে না ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’

২০০৯ সালে সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও বারবার তাদের উপস্থিতি জানান দিতে তৎপর এ জঙ্গি সংগঠনটি। কথিত খিলাফত প্রতিষ্ঠায় কখনও মিছিল আবার কখনও ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করলেও তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। আর আয়োজকরা চিহ্নিত হলেও এখনো তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।