
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির ছেলে কর্তৃক হিন্দু সম্প্রদায়ের বাবা-ছেলেকে মারধরের প্রতিবাদে ঝিনাইদহ-ঢাকা মহাসড়কের মধুপুর চৌরাস্তা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের লোকেরা।
রবিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ৯টা পর্যন্ত তারা জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এই অবরোধের কারণে মধুপুর চৌরাস্তা থেকে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যেয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
মারধরে শিকার রাজকুমার বিশ্বাস ও তার ছেলে তুষার বিশ্বাস ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালীচরণপুর ইউনিয়নের উত্তর কাষ্টসাগরা গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী রাজকুমার বিশ্বাস জানান, তার ছেলের বউ পূজা রানী বিশ্বাসের সাথে ঝিনাইদহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল ইসলামের ছেলে নিলয় ইসলামের পরকীয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়। প্রায় ৩ মাস আগে তার ছেলের বউ নিলয়ের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সামাজিক ভাবে আলোচনার ভিত্তিতে আবার তাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পরে আবারও ওই ছেলে সাথে পালিয়ে যায় পুজা রানী। পরে আবারও সামাজিক সালিশির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ছেলে-বউমাকে যশোরের আত্মীয় বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি ছেলে বউমা বাড়িতে ফিরে আসলে আবারও যোগাযোগের চেষ্টা করে নিলয় এবং পুরো পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে সে।
রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, গতকাল রবিবার রাত সোয়া আটটার দিকে আমি ও আমার আরেক ছেলে তুষার বিশ্বাস মধুপুর চৌরাস্তা বাজারে ছিলাম এসময় নিলয় ইসলাম কিছু লোকজন সাথে করে নিয়ে এসে আমাদের মারধর করে। পরে আমাদের সম্প্রদায়ের লোক নিয়ে এদের হাত থেকে বাঁচতে সড়ক অবরোধ করি।
তুষার বিশ্বাস বলেন, নিলয় ইসলামের কারণে আমরা বাড়িতে বসবাস করতে পারছিনা। তার ভয়ে আমরা বাজার-ঘাটে চলাচল করতে পারছি না।
আরাপপুর হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, কিছু সময়ের জন্য মধুপুর চৌরাস্তা বাজারে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে সেখানে সেনাবাহিনীর একটি টিম যায়, আমি যায় এবং সদর থানার পুলিশ যেয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিই। কিছু সময়ের মধ্যেই যান চলাচলা স্বাভাবিক হয়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাতে সড়ক অবরোধের সংবাদ পেয়ে আমরা মধুপুর চৌরাস্তা বাজারে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি আগে থেকেই সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। তারা অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
পরে আমরা জানতে পারি উত্তর কাষ্টসাগরা গ্রামের নিশান বিশ্বাসের ছেলের বউয়ের সাথে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রেজাউল ইসলামের ছেলে নিলয় ইসলামের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। তারা কয়েক মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়েও গিয়েছিল। আজকে রাতে রাজ কুমার বিশ্বাসকে নিলয় ইসলাম ঘুশি মেরেছে সেই কারণে স্থানীয় মুসা মেম্বারের নেতৃত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা সড়ক অবরোধ করে।
বিচারের আশ্বাসের বিষয়ে ওসি বলেন, এর আগে তারা এমন কোন অভিযোগ থানায় করেননি। তারা লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।