নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর ভিন্ন অভিযোগ

বড় ভাই মোমিনের উপর অভিমান করে মাঠে গিয়ে বিষ পান করে ছোট ভাই ওমর ফারুক । এ ঘটনা ভিন্ন দিকে ঘুরাতে এবং স্বামীকে শাসন করার জন্যই মা সাবিনা খাতুন স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ‘বাবা কর্তৃক ছেলের মুখে বিষ ঢেলে দেয়ার।

এ গল্প এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের কারণে এক রকম প্রতিশোধ নিতেই ছেলের মুখে বিষ ঢেলে দেয়ার বানোয়াট কথা প্রচার করা হয়েছে বলে অবশেষে স্বীকার করেন শিশু ওমর ফারুকের মা সাবিনা খাতুন। এখন নিজের ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত হচ্ছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ২০ অক্টোবর মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শহড়াতলা গ্রামের ভিটাপাড়ায়।

বিষপান করে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে শিশু ওমর ফারুক প্রকৃত ঘটনা জানান এলাকাবাসীর কাছে, তার বড় ভাই মোমিন একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। কারণে অকারণে মাঝে মধ্যেই মারধর করতো ওমর ফারুক কে।

ঘটনার দিন তাকে মারধর করে বড় ভাই। বড় ভাইয়ের ওপর ক্ষোভ করে বাড়ির পাশের একটি মাঠে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বিষের বোতলে পানি ঢেলে ঝাকিয়ে সেই পানি পান রে। এ সময় মা সাবিনা খাতুন বাড়ি ছিলেন না। পরে মা এসে বাবার নামে বিভিন্ন অভিযোগ করেন এবং আমার মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে বলে প্রচার করেন। আমার বিষপানের কথা শুনে আমাকে ঘরে আটকিয়ে রাখে আমার বাবা মজিবর রহমান। ঘন্টা খানেক পর আমার বড় বোন এসে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার বড় বোন না আসলে আমার মৃত্যু হয়ে যেত বলেও জানায় ওমর ফারুক।

তবে এলাকাবাসীরা জানায়, মজিবর রহমান স্ত্রী সাবিনার ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। তবুও নিজের মানসম্মান ঘুছিয়ে মজিবর রহমানের সংসার করছে সাবিনা খাতুন। প্রতিবেশিরা আরো জানায় সাবিনাকে রেখে তার স্বামী মজিবর একাধিক বিয়ে করেন। যার ফলে সাবনিার ওপর চলে অমানসিক নির্যাতন।

সাবিনা খাতুন জানান, আমার চার ছেলে-মেয়ের সংসার। আমার স্বামী মজিবর আমার ওপর কারণে অকারণে প্রায় নির্যাতন চালাতো। প্রায় নয় মাস আগে আমাকে সাবল দিয়ে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং আমার পেটে সাবল দিয়ে আঘাত করে। তারপরে সে আমাকে বাবার বাড়ি তাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়াও অন্য পুরুষের সাথে সম্পর্ক আছে বলেও মিথ্যা অপবাদ দেয়। এ কারণেই স্বামীকে শাসন করার জন্যই ছেলের মুখে বিষ ঢেলে দেয়ার কথা বলেছি।

ওমর ফারুকের বাবা মজিবর রহমান জানান, স্ত্রী সাবিনা খাতুনের বিষয়ে আমার সন্দেহ হয়। এমন বিষয় নিয়ে পলাশীপাড়া সমাজকল্যাণ সমিতিতে অভিযোগ করা হয়। সেখানে নিজের দোষ স্বীকার করে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করবে মর্মে স্বীকার করলে সাবিনাকে বাড়ি আনা হয়।

কিন্তু ছেলের বিষপানের কারণে স্ত্রী পুরাতন হিসেব করবে তা জানা ছিল না। তার হুমকির কারণে গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়। তবে স্বামী-স্ত্রীর বিষয়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি ভালো নয় বলে জানান এলাকাবাসী।