পশুর বাজারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে চুয়েটের পূর্ণাঙ্গ মডিউল

গরু ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য থাকবে সুনির্দিষ্ট জায়গা। গরু পর্যবেক্ষণে থাকবে বিশেষ জায়গা। থাকবে চলাচলের পৃথক পথ। হাটে আসা পশুগুলোকে রাখা হবে নির্দিষ্ট আয়তনে। পশু রাখার স্থান পরিষ্কার রাখতে পরিবেষ্টিত থাকবে বর্গাকারের নালা। এতে পশু রাখার পথগুলো থাকবে শুকনো। প্রত্যেক মডিউলের কেন্দ্রীয় স্থানে দূর থেকে বিক্রেতারা অবস্থান করতে পারবেন। রাখতে পারবেন পশুর প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আছে হাত ধোয়ার নির্দিষ্ট জায়গা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্ট্যান্ড, জীবাণুমুক্তকরণ চেম্বার পার করেই প্রবেশের নির্দেশনা।

কোরবানির বাজারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে এমন একটি মডিউল তৈরি করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের তিন শিক্ষার্থী। চুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকেরের উদ্যোগ এবং চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিয়া তাসনিম ও ফারহান আরিফ রহমান মডিউলটি উদ্ভাবন করেন। মডিউলটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব ১৩০০ বর্গফুট জায়গার হাটে। এর মাধ্যমে দেশে যেকোন হাটে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। কমবে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি। ইতোমধ্যে মডিউলটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পশুর হাটে বাস্তবায়নে গত রবিবার চসিক মেয়র ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মঙ্গলবার বাজার ইজারাদারদের সামনে প্রজেক্টরের মাধ্যমে মডিউলটি উপস্থাপন করা হয়।

চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফিয়া তাসনিম বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে কোরবানির হাটে সংক্রমণের ঝুঁকিটা প্রকট। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জের। বর্তমানে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে সামনে আসে। তাই পশুর হাটের স্বাস্থ্যবিধি কেমন হবে তার একটি পূর্ণাঙ্গ মডিউল তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে চসিকের কাছে মডিউলটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি চসিকের বাজারে বাস্তবায়ন করা হবে।’
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম বলেন, ‘চুয়েটের শিক্ষার্থীদের মডিউলটি সময়োপযোগী। সেখানে ব্যক্তি ও সামাজিক দূরত্ব, স্যানিটাইজার ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সব উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে ইজারাদারদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। আশা করি, সকলেই মডিউল অনুসারে বাজারে পশু বিকিকিনি করবেন।’

চসিকের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, নগরে তিনটি স্থায়ী ও চারটি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। স্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে-সাগরিকা, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। অস্থায়ী চারটি হলো কমল মহাজন হাট, সল্টগোলা গরুর বাজার, বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণের খালি মাঠ ও কর্ণফুলী পশুর বাজার। চাঁদদেখা স্বাপেক্ষে আগামী সোম বা মঙ্গলবার থেকে হাটগুলোতে পশু বিকিকিনি শুরু হবে।

চসিক ইজারাদারদের জন্য কিছু করণীয় নির্ধারণ করেছে। নির্দেশনার মধ্যে আছে, পশুর দূরত্ব নিশ্চিত, ঠিকাদারদের পক্ষে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা, বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার, সকাল থেকে বাজার বসানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা, লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ, নির্দ্দিষ্ট স্থানে পশু বাঁধার খুঁটি, ছাউনি, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও জীবাণুনাশক সামগ্রী বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট দোকান, আইনশৃংখলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের ক্যাম্প ছাড়া আর কোন ধরনের দোকানপাট বা স্থাপনা থাকবে না, বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু-কিশোররা বাজারে না আসা এবং ক্রেতার সঙ্গে সর্বোচ্চ দুইজনের বেশি না থাকা।

সূত্র- বিডি-প্রতিদিন