পারিবারিক সহিংসতা রোধে সকলকেই ভূমিকা রাখতে হবে

সামাজিক মূল্যেবোধের অবক্ষয়, একে অপরের সাথে মনোমালিন্য, পরিবারের প্রতি উভয়ের টানাপোড়েনের কারণে পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারিবারিক সহিংসতার কারণে প্রতিনিয়ত হত্যা ও আত্মহত্যার মত মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটছে।

বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর গত ৯ মাসের একটি পরিসংখ্যানে তারা জানিয়েছে, গত ৯ মাসে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪৩২ নারী। এর মধ্যে হত্যার শিকার হন ২৭৯ নারী এবং পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭৪ নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ১৬৮ নারী। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭৩ জন। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৬৬ জনকে এবং নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১৭ জন নারী।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দীতে গরম পানি দিয়ে ঝলসিয়ে রুবিনা খাতুন নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে । এ ঘটনায় গতকাল শনিবার গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। চিকিৎসক ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে হত্যার বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে পরিস্কার হবে হত্যার বিষয়টি।

তবে হত্যা বা আত্মহত্যা যাই হোক না কেন পারিবারিক সহিংসতায় একটি জীবনের ইতি ঘটলো। যা কখনোই একটি সুষ্ঠ সমাজের কাম্য নয়। এভাবে দেশের বিভিন্ন আনাচে কানাচে ঝরে যাচ্ছে কত প্রাণ। নির্যাতনের শিকার হয়ে ক্ষত বয়ে বেড়াতে হচ্ছে অসংখ্যা জনকে। শুধু যে নারীরাই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাও কিন্তু নয়। কিছু ক্ষেত্রে পুরুষরা নির্যাতিত হচ্ছেন। তারা আত্মহত্যা করে জীবন দিয়ে দিচ্ছেন অথবা হত্যার শিকার হচ্ছেন।

সমাজের এই নষ্ট চিন্তা রোধে সকলকেই একযোগে কাজ করতে হবে। সমাজের প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক মূল্যেবোধ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে। না হলে অদূর ভবিষ্যৎ এ আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি অবলোকন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণগুলোও অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। গণজাগরণ গড়ে তুলে পারিবারিক সহিংসতা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।