পেঁয়াজ চাষে ব্যাস্ত কুষ্টিয়ার কৃষকরা

কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা। পেয়াঁজের দতাম বাড়ায় এবার অধিক পরিমাণে গুরুত্ব দিয়ে জমিতে যত্ম সহকারে চাষে ব্যতিব্যস্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষীরা।

তবে দেশীয় পেয়াজ এর চেয়ে হাইব্রিড জাতের কিং পেঁয়াজ বেশী লাগানো হচ্ছে। চাষীরা বলছেন অল্প খরছে ভালো ফলন হওয়ায় এই হাইব্রিড জাতের কিং পেঁয়াজ লাগানো হচ্ছে।

সদর উপজেলার করিমপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, গতবছর আমি ১০ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম। কিন্তু পেয়াজের দাম না পেলেও এ বছরে পেঁয়াজের অনেক দাম থাকায় এবারে ৩বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগাচ্ছি। শ্রমিক ঠিকমতো না পাওয়ায় নারী শ্রমিকদের দিয়েও পেঁয়াজ লাগাচ্ছি।

কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম এলাকার আতিয়ার রহমান জানান, এবারে পেয়াজ চাষে খরচ বাড়বে অনেক।কারন গতবার ১ কেজি পেঁয়াজ বীজ কিনেছিলাম সাড়ে ৩ হাজার টাকায় এবার সেই পেঁয়াজ বীজ কিনতে হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার টাকায়।আবার যদি ভালো দাম না পায় তাহলে লোকসান গুনতে হবে।

সদর উপজেলার পার মৃত্তিকাপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল বারী জানান, আমরা চাষী মানুষ। শুধু ধান চাষ করলেই হবে না। এবার পেঁয়াজের দাম ভালো হয়েছে। তাই এবারে একটু বেশি করে পেঁয়াজ চাষ করেছি। যদিওবা প্রতিবছরই পেয়াজের চাষ করা লাগে। তবে দাম বেশি থাকার কারনে এবার বেশি পরিমানে আবাদ করেছি।

অন্যদিকে পেঁয়াজের চাষ বেশী হওয়ায় পুরুষের পাশাপাশি নারী সহ ছাত্রছাত্রীরাও পেঁয়াজ লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

কুষ্টিয়া শহরতলীর মোল্লাতেঘরিয়ার মাঠ সবাই দল বেধে একটি লাইনে একসাথে পেঁয়াজের জমিতে বসে পেঁয়াজের চারা রোপন করছেন। এবার পেঁয়াজের দাম মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে চাষীরদের। অন্য সব ফসলের পাশাপাশি পেঁয়াজ চাষের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন চাষীরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন,

কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৪শ ৪০ হেক্টর। এর মধ্যেই কুমারখালী ৫ হাজার ২০ হেক্টর, দৌলতপুরে ২ হাজার ৪শ ২৫হেক্টর, মিরপুরে শে হেক্টর, ভেড়ামারায় ২শ ৪০হেক্টর, সদর ১হাজার ৬০৫ হেক্টর ও খোকসায় ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে পেয়াজের চাষ হয়েছে। আগামী মার্চ এপ্রিল দিকে উঠবে পেয়াজ।
গতবারের চেয়ে এবার বেশি জমিতে পেয়াজের আবাদ হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এজন্য চাষীদের উদ্বুদ্ধের পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের যে পাঁচটি জেলায় পিঁয়াজের বেশি উৎপাদন হয় তার মধ্যে কুষ্টিয়া একটি। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার কুষ্টিয়ার পেঁয়াজ দিয়ে দেশের বড় একটি চাহিদা মেটানো যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ঠরা।

বাম্পার ফলন ও ভাল দামের আশায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চারা রোপণ হয়েছে।