প্রচণ্ড গরমে কুষ্টিয়ায় কদর বেড়েছে তাল শাঁসের

গ্রীষ্মের দুপুরে, প্রচণ্ড গরমে শরীর যখন ক্লান্ত, তখন খুব দ্রুত প্রশান্তি এনে দিতে পারে তালের শাঁস। এর মোহনীয় ঘ্রাণ এবং সুমিষ্ট স্বাদ আমাদের অনেকেরই প্রিয়। সাধারণত গ্রীষ্মকালে দেশের বাজার গুলোতে কচি তাল দেখতে পাওয়া যায়। আর এলাকা ভেদে একটি তালের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা।

কুষ্টিয়া শহরের ছয় রাস্তা মোড়, থানা ট্রাফিক মোড়, কাটাইখানা মোড়, সিঙ্গার মোড়, মজমপুর গেট, চৌড়হাস মোড় সহ বিভিন্ন এলাকায় এসব তাল শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে।

শহরের কাটাইখানা মোড়ের তালশাঁস বিক্রেতা আরিফ আলী। তিনি কুমারখালী উপজেলার বানিয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা। বছরের অন্যান্য সময় ইটভাটায় কাজ করলেও এখন তিনি আর একজন মিলে তালের শাঁস বিক্রি করেছেন।

তিনি বলেন, একটি তাল থেকে দু’টি বা তিনটি শাঁস হয়। প্রতি পিস এখন ৭ টাকায় বিক্রি করছি। অথচ গত বছরে তিন থেকে চার টাকায় বিক্রি করেছি। এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে এসব কচি তাল কিনে আনতে হয় আর তালের সংকট থাকায় এর দাম বেড়েছে।

প্রতিদিন দুই হাজার টাকার তাল শাঁস বিক্রি করেন তিনি। এতে পাঁচ-সাতশ’ টাকা লাভ থাকে, যা দিয়ে আরিফ ও তার সহযোগীর সংসার মোটামুটি ভালোভাবেই চলে যায়।

তাল শাঁস কিনতে আসা ক্রেতা বিপুল হোসেন বলেন, গত বছরের থেকে এবার তাল শাঁসের দাম অনেকটাই বেশি। গত বছর যে তালের শাঁস ৩-৪ টাকায় কিনেছি এবার সেই তাল শাঁস ৬-৭ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তারপরও মৌসুমি ও সুস্বাদু হওয়ায় এর প্রতি আগ্রহের কমতি নেই বলেও জানান তিনি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: এসএম মুসা কবীর বলেন, একে সুস্বাদু, অন্যদিকে কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায়, তা দেহের পানিশূন্যতা অনেকটাই পূরণ করে। ফলে জ্যৈষ্ঠের এ গরমে কুষ্টিয়ার হাট-বাজারে বেশ কদর বেড়েছে তাল শাঁসের।

এদিকে তালগাছ রোপণ করে থাকেন এমন একটি সংগঠন ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এর পরিচালক সাহাবুদ্দিন মিলন বলেন, ‘আমি আমার সংগঠনের মাধ্যমে বজ্রপাত রোধে তালগাছ রোপণ করে থাকি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার সড়কের ধারে ও খালের পাড়ে তালের গাছ রোপণ করে থাকি। কৃষি অফিসসহ সামাজিক ও বিভিন্ন সংগঠনের আলাদা আলাদা দল এই তালের গাছ রোপণ করে আসছি।’

এ বছর তালের ভালো ফলন হয়েছে জানিয়ে কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘এবার তালের ফলনটাও ভালো হয়েছে। এছাড়া নতুন নতুন গাছ থেকে এই তাল সংগ্রহ করা হচ্ছে।’ তালগাছ বজ্রপাত রোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে বলেও জানান তিনি।