‘প্রজেক্ট তৃষ্ণা’ অনেকের বিশুদ্ধ পানির ভরসা

মানুষসহ প্রতিটি প্রাণীর জীবনধারণের জন্য পানির প্রয়োজন অপরিহার্য। আর এই বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি ‘প্রজেক্ট তৃষ্ণা’র কার্যক্রমকে আরও বেগবান করে তুলতেই নিরলসভাবে কাজ করছে স্মাইল ইন লাইফের সভাপতি মো. বাপ্পী।

তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গ্রাম এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে টিউবয়েল সরবরাহ করে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে।

কুষ্টিয়ায় গেল এক বছরে অন্তত একশোটির বেশি ‘প্রজেক্ট তৃষ্ণা’ নামে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির টিউবওয়েল স্থাপন করেছে। আরও বেশ কিছু স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।

ফিড মি’র অর্থায়নে এ কাজে সহযোগিতা করছে ফুটস্টেপস বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন। কুষ্টিয়ার একটি সামাজিক সংগঠন স্মাইল ইন লাইফ গ্রামাঞ্চলে অবহেলিত মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রাস্তার ধারে কিংবা মোড়ে, মসজিদের সাথে, কবরস্থানে এমনকি মাঠে কৃষকদের প্রয়োজনেও এই সংস্থার উদ্যোগে স্থাপন করা টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

মিরপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের জিকে ক্যানেল মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে প্রজেক্ট তৃষ্ণার নলকূপ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মাঠ থেকে আগত কৃষক কিংবা পথচারীরা এসে এখান থেকে পানি পান করছেন।

সেখানে স্থাপন করা টিউবওয়েলের হ্যান্ডেলের সাথে রাখা আছে একটি মগ। সেই মগে করে মানুষ খাচ্ছে আবার সেখানেই রেখে দিচ্ছে। গ্রাম পর্যায়ে প্রান্তিক মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েন স্থানীয়রা।

আবুল কাশেম নামের এক কৃষক বলেন, মাঠে কাজ করার সময় প্রচণ্ড গরমে অনেক তৃষ্ণা লাগে। তখন একটু পায়ে হেটে এসে এখান থেকে পানি পান করার পর বুকটা জুড়িয়ে যায়। এই মাঠের কোনে ক্যানেলের ধারে যারা এই টিউবওয়েল দিয়েছে তাদের যেন মঙ্গল হয় বলেও দোয়া করেন সেই কৃষক।

স্মাইল ইন লাইফের সভাপতি মো. বাপ্পী বলেন, প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেক রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু তাই নয়, পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করলে আমাদের পিপাসা মেটানোর পাশাপাশি শরীরের পানি শূন্যতাও দূর হয়। ফলে শারীরিক ক্লান্তি দূর হয় এবং শক্তিও ফিরে আসে। পানি রক্ত ও রক্ত কণিকায় অক্সিজেন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।

তিনি বলেন, আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছি আসলে গ্রামাঞ্চলের কোথায় প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানির টিউবওয়েলের। যেমন ধরুন, গ্রামের কৃষক পথচারীদের জন্য মাঠের কোণে, রাস্তার মোড়ে কিংবা ছোট মুদি দোকানির আশপাশে যেখান থেকে সহজেই মানুষ বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি পেতে পারে তেমন জায়গায় টিউবওয়েল স্থাপন করা হচ্ছে।

এতে করে কিন্তু সেই এলাকার জনসাধারণের পানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে। আর এগুলো সম্ভব হচ্ছে কেবল ফুটস্টেপস বাংলাদেশ নামের সংগঠনের সার্বিক সহযোগিতায়।কুষ্টিয়ায় গেল এক বছরে অন্তত একশোটির বেশি ‘প্রজেক্ট তৃষ্ণা’ নামে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির টিউবওয়েল স্থাপন করেছি এছাড়াও চলমান রয়েছে এই প্রকল্পটি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জৈষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এএসএম মুসা কবির বলেন, শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে পানির ভূমিকা অপরিসীম। পানি আমাদের হজমশক্তি বাড়ায়, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে। পানি শরীরের কিডনিতে পাথর হওয়া থেকেও প্রতিহত করে। পানি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কিন্তু শরীর পানিশূন্য হয়ে গেলে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট এর ইমব্যালেন্স হতে পারে। এতে করে তীব্র মাথাব্যথা হয়ে থাকে অনেকেরই। তাই তীব্র জ্বরের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিৎ।