প্রতিমায় চলছে রঙ তুলির শেষ আঁচড়

আগমনী বার্তা নিয়ে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব। মহালয়ার মধ্যদিয়ে দেবী দূর্গার আগমন ঘটেছে মর্তলোকে। এবার দেবী দূর্গা আসবে ঘোড়ায় চড়ে। মা কে বরণ করে নিতে পূজা মন্ডপগুলোর প্রতিমাতে দেওয়া হচ্ছে তুলি শেষ আঁচড়। মনের মাধুরি মিশিয়ে, নিপুন হাতে প্রতিমা শিল্পিরা নিরলস সেই কাজে ব্যস্ত।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহেরপুরের হরিসভা মন্দির, বড় বাজার কালী মন্দির, নায়েববাড়ি রাধা মাধব মন্দির, দাস পাড়া কালী মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। পূজা মন্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে নানান সাজে। সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে বিরাজ করেছে উৎসবের আমেজ।

স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে শিল্পিরা এখানে এসে রং করছেন প্রতিমায়। দূর্গা ছাড়াও লক্ষী, স্বরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস, সর্পসহ প্রায় ১২টির অধিক প্রতিমায় দেওয়া হচ্ছে পছন্দের রং। প্রতিমায় রং করার পাশাপাশি অস্থায়ী মন্ডপ গুলোতে চলছে প্যান্ডেল তৈরির কাজ।

পঞ্জিকা অনুযায়ী ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে দেবীর বোধনের মধ্যে শুরু হবে এ শারদীয় দুর্গোৎসব। দশমী পূজার মধ্য দিয়ে ২৬ অক্টোবর শেষ হবে এ উৎসব।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ থেকে জানা গেছে, এবছর মেহেরপুর জেলায় ৪২টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গোৎসব। এর মধ্যে সদরে ১৪টি, গাংনী উপজেলায় ২২টি ও মুজিবনগরে ৬টি।

প্রতিমা শিল্পি মানিক পাল বলেন, প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ, এখন চলছে রঙ করার কাজ। আগামী সপ্তাহ খানেকের ভিতর পূজা তৈরির সকল কাজ শেষ হয়ে যাবে।

মেহেরপুরের ঐতিহাসিক নায়েব বাড়ি পূজা মন্ডপের পুরোহিত জিৎ মূখার্জি জানান, এবার পূজার প্রস্ততি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু অপেক্ষা মা দূর্গাকে বরণ করে নেওয়ার।

তবে করোনা আতঙ্কের কারনে অনেকটা ভাটা পড়েছে এবারের পূজা উৎসবে। সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপন করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এবছর আরতি, গান-বাজনা, পূজা প্যান্ডেলের পাশে মেলা বসানো, বিসর্জনের আগে শোভাযাত্রা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শহরের নায়েববাড়ি রাধা মাধব মন্দিরের সভাপতি চিত্তরঞ্জন সাহা বলেন, পূজা উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। পূজাটা যেন সুন্দর সুষ্ঠুভাবে সরকারি বিধি নিষেদ মেনে মন্ডপে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী রেখে পূজা পূজা শেষ করতে পারি এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

মেহেরপুর হরিসভা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক কিশোর পাত্র বলেন, আমরা এক বছর ধরে অপেক্ষা করছি, কখন মা আসবে। মায়ের আগমনের জন্যই আমাদের এই প্রস্তুতি । যথেষ্ট পরিকল্পনা থাকার পরও প্রতিবারের মতো এবারের পূজাতে ততটা জাঁকজমকপূর্ণ করতে পারছি না।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান পূজা উদযাপন প্রস্তুতি সভায় বলেন, করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ আমাদের সতর্কতার সাথে মোকাবেলা করতে হবে। আমরা অসম্প্রাদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে যার যার ধর্ম পালন করে আসছি। হাজার বছরের ঐতিহ্য আমাদের। আমাদের ঐতিহ্য যাতে ভাটা না পড়ে সে দিক বিবেচনা সরকারি বিধি মেনে দূর্গোৎসব পালনের তাগিদ দেন তিনি।