প্রবাসীর স্ত্রী নিয়ে উধাও তিন সন্তানের জনক

তিন পরিবারকে পথে বসিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে শিশু বাচ্ছাসহ ভাগিয়ে নিয়ে গেছে তিন সন্তানের জনক কালু হোসেন। ভ’ক্তভোগী ওই তিনটি পরিবার এখন অভিযুক্ত কালু হোসেনের বিচার দাবীতে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গাংনী উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামে।

জানা গেছে, করমদী গ্রামের নজিমুদ্দীনের ছেলে কালু হোসেনে প্রায় ২৫ বছর আগে পার্শ্ববর্তি কল্যাণপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার লাইলী খাতুনের সাথে বিয়ে করে। বিয়ের পর শশুরের দেওয়া জমিতেই ঘর বানিয়ে থেকে যান কালু হোসেন। তার ২ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও এখনো ছোট মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তার। তিন সন্তানের জনক কালু হোসেন একই গ্রামের কাতার প্রবাসী রহিদুল ইসলামের স্ত্রী এক সন্তানের জননী শুকিলা খাতুন (২৮) এর সাথে পরোকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। চলতি মাসের ১২ তারিখে তারা অজানার উদ্যেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন।

শুকিলা খাতুনের ভাসুর নাজিমুদ্দীন বলেন, আমার ভাই রহিদুল কাতারে রয়েছেন। সেখান থেকে পাঠানো প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, টাকা ও স্বর্ণালংকার আমাদের কাছে বিষয় নয়, ৪ বছর ২ মাস বয়সী ভাইস্তি মুস্তাকিমকে তারা হত্যা করতে পারে।

আমার প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছি। মামলার পরে সে মোবাইল ফোনে আমাকে নানাভাবে হুমকী দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে তাদের কাছে থাকা ভাইস্তি মুস্তাকিমকে হত্যা করবে বলেও হুমকী দিচ্ছে।

এদিকে কালু হোসেনের স্ত্রী লাইলী খাতুনও তার স্বামী ও পরোকীয়া শুকিলা খাতুনের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। লাইলী খাতুন বলেন, আমার স্বামী প্রায় ২ বছরে ধরে প্রবাসীর স্ত্রী শুকিলা খাতুনের সাথে পরোকীয়া করে আসছে। এই দুই বছরে সে আমাকে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আসছে। আমার মায়ের নামে সে ২ লাখ টাকা এনজিও’র কাছ থেকে তুলে নিয়ে আমাকেও বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এখন আমি আমার ভাইয়ের বোঝা হয়ে আছি। এনজিওর লোকজন আমার বাড়িতে আসছে টাকা নিতে।

তিনি বলেন, শুধু বাবার এই অপকর্মের কারণে, এখন জামায় আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে। ছোট একটা ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। তিনি বলেন আমার স্বামী কালু হোসেন ও তার পরোকীয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করছি।

এদিকে শুকিলা খাতুনের দিন মজুর পিতা গোলাম হোসেন বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে মেয়েটাকে ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছিলাম। তার স্বামী এখন বিদেশ আছে। তার কোনো কিছুর অভাব নেই। আমার কাছ থেকে সমিতি থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা তুলে নিয়ে গেছে সে। আমি অভিযুক্ত কালু হোসেনের নামে থানায় মামলা করেছি। আমার মেয়ের সংসার ভাঙার জন্য কালু হোসেনের উপযুক্ত বিচার দাবী করছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কাওছার আলী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক। ছোট শিশুটি তাদের কাছে রয়েছে। কালু হোসেনেরও তিনটি সন্তান রয়েছে। আমরা স্থানীয়ভাবে তাদের খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছি। তাদের পেলে বিষয়টি নিয়ে বসে একটা সমাধানে আসা হবে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।