ফুচকা বিক্রেতার সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত

গেল বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়ে লাইমলাইটে আসেন যশস্বী জসওয়াল। এর পরই জানা গেছে তার সংগ্রামের ইতিহাস। মঙ্গলবার ১৮ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যানের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। ছোটদের বিশ্বমঞ্চে পাকবধের নায়ক তিনিই।

অনুশীলনের ফাঁকে ফুচকা বিক্রি করে আর্থিক উপার্জন করতেন যশস্বী। তবে ক্রিকেটের প্রতি নাড়ির টান এবং অগাধ ভালোবাসা ছিল তার। মুম্বাইয়ে নিয়মিত ক্রিকেট প্র্যাকটিস করতেন তিনি। এর আস্থার প্রতিদানও পেয়ে যান এ তরুণ। সুযোগ মেলে ভারতের বিশ্বকাপ দলে।

প্রায় তিন বছর তাঁবুতে রাত কাটিয়েছেন যশস্বী। মূলত আজাদ ময়দানে রাম লীলার সময় ফুচকা বিক্রি করে কিছু টাকা উপার্জন করতেন তিনি। তার জন্ম উত্তরপ্রদেশের সুরিয়ায়। তবে ১১ বছর বয়সে বাবার হাত ধরে বাণিজ্য নগরীতে চলে আসেন প্রতিশ্রুতিশীল এ ক্রিকেটার।

তখন থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন যশস্বী। এর ফাঁকে বাবার সঙ্গে ফুচকা ও পুরি বিক্রি করতেন তিনি। এভাবেই চলত তাদের সংসার-পরিবার। এবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতের জার্সিতে সুনাম কামালেন সেই ছেলেটিই।

সেমিতে পচেফস্ট্রুমে পাকিস্তানি বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেন যশস্বী। গেল বছর মুম্বাইয়ের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। গেল মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে ছত্রিশগড়ের বিপক্ষে এ ঘরানার ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয় এ টিনএজার ক্রিকেটারের।

চলতি বছর বিজয় হাজারে ট্রফিতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে নির্বাচকদের নজর কাড়েন যশস্বী। ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ১৫৪ বলে ২০৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে প্রতিভার পরিচয় দেন তিনি। ইনিংসে ১২টি ছক্কা ও ১৭টি চার মারেন এ কিশোর।

যশস্বীকে ইতিমধ্যে বাঁহাতি ‘বিরাট কোহলি’ বলে ডাকা শুরু হয়েছে৷ ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বাইয়ের হয়ে অনবদ্য পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। কনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে লিস্ট-এ ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানোর নজির রয়েছে তার।

ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর যশস্বীর বাবা ভূপেন্দর কুমার জসওয়াল বলেন, ছোট থেকেই আমার ছেলে স্বপ্ন দেখত একদিন দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে। সেই স্বপ্নই এবার পূরণ হতে চলেছে।

এদিন ভূপেন্দরের স্বপ্ন পূরণ হলো সেই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার ছেলের ব্যাটে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল ভারত। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শেষ চারে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৩ বলে ১০৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন যশস্বী। অথচ ক্রিকেটার হয়ে ওঠার লড়াইয়ে অর্ধেক দিন না খেয়েই রাত কাটাতে হয়েছে উদীয়মান খেলোয়াড়কে।

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যুব বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দারুণ ফর্মে রয়েছেন যশস্বী। পাঁচ ম্যাচে তিনটি হাফসেঞ্চুরি এবং একটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৬২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার।

তথ্যসূত্র: কলকাতা ২৪

আরো পড়ুন-বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ তৈরি করেছিলেন ইনু: জাতীয় সংসদে ফিরোজ রশীদ