ফুলে ফুলে সজ্জিত মুজিবনগর থানা, আছে সবজি-ফলও

ফুলে ফুলে মুখরিত মুজিবনগর থানা চারিদিকে যখন শীতের হাওয়া, শুকনো পাতার মড়মড় শব্দ আর রুক্ষতা। সেখানে এই শীতে ফুলে ফুলে মুখরিত হয়েছে মুজিবনগর থানা। থানা চত্বরের যেদিকেই তাকাই সেদিকেই বিচিত্র সব বর্ণাঢ্য ফুলের সমারোহ।

কোনটা রেখে কোনটা দেখি। ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা থানা চত্বর, যা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এছাড়া থানার বাইরে গেটের দুইপাশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সবজি বাগান।যেখানে চাষ করা হয়েছে মূলা,পালং শাক,লাল শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি।

যা দিয়ে থানার সকল সদস্যসহ এলাকার বিভিন্ন মানুষের মেটাচ্ছে প্রয়োজনীয় চাহিদা।

অনেকেই থানায় যেয়ে তরকারী রান্না করার জন্য তুলে নিয়ে আসছে সবজি।মুজিবনগর থানার পক্ষ থেকে সে সকল সবজি এলাকার হতদরিদ্র মানুষের খাওয়ার জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া আছে।

তাছাড়া থানার ভিতরে ঢুকতেই চোখে পরে বিশাল ফুলের বাগান।থানার সকল সদস্যদর
তো বটেই সাথে প্রাকৃতিক শোভায় টেনে আনছে স্থানীয় জনগনসহ বাইরে থেকেও মুজিবনগরে ঘুরতে আসা বিভিন্ন বয়সের মানুষদের।

মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাশেমের নিজস্ব উদ্যেগে থানা চত্বরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরণের ফুলের বাগান। এই বাগানে ফুটেছে নানান প্রকৃতির ফুল। তার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের গাঁদা, ডালিয়া, জিনিয়া, গোলাপ, জবা, চেড়িফুল, রেডবল,পয়েনচেটিয়া,রঙ্গন,ছেলেসিয়া ও পাতাবাহারসহ নানা জাতের ফুল। এছাড়া লাগানো হয়েছে চায়না লেবু,পেঁপে, কদবেল,পেয়ারা, বাতাবি লেবু,কাগজি লেবু,কাঠাল,মিষ্টি আমড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারা।

তিনি ১৫/০৭/২০১৮ সালে মুজিবনগর থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে যোগদান করেন। তারপর থেকেই তিনি নিজ উদ্যেগে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল গাছ লাগিয়ে থানা প্রাঙ্গনের পরিবেশটা সাজিয়ে রাখেন।

আর প্রতিদিন মুজিবনগরে ঘুরতে আশা দর্শনার্থীরা একপলক হলেও ফুলের বাগান দেখতে যায় থানা প্রাঙ্গনে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যত্ন নিয়ে তৈরি করা ফুল মুখরিত করেছে মুজিবনগর থানা।

স্থানীয়রা বলেন,সকলে বলে এটা থানা।মানুষ এই জায়গায় ঠুকতে ভয় পাই। মানুষ মনে করতো পুলিশের কোন মন নেই।
কিন্তু থানার ভিতরে এত সুন্দর একটা ফুলের বাগান তৈরি করে পুরো থানা প্রাঙ্গনকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে মুজিবনগরের মানুষের মনে জমা এই ধারনাটি চেন্জ করে দিয়েছে আমাদের ওসি স্যার।

তিনি প্রমান করে দিয়েছে পুলিশও সাধারন মানুষের মত।তারাও চায় সকলের মত সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে।
আমরা প্রায় ফুলের বাগান দেখতে থানার ভিতরে যায়।আমাদের অনেক ভালো লেগেছে ওসি স্যারের এমন মহৎ উদ্যেগ।

মুজিবনগরে ঘুরতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীরা জানান,মুজিবনগরে ঘুরতে এসে এত সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো একটি থানা দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগছে।সচারচর এমন দৃশ্যে চোখে পরে না। তাছাড়া চারিদিকে ফুলগাছ লাগিয়ে থানাটি দেখতে আরো সুন্দর লাগছে।

মুজিবনগর থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাশেমের কাছে এমন একটি মহৎ উদ্যেগে তার অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি মেহেরপুর প্রতিদিনকে জানান, আমি মুজিবনগরে আসার পর প্রধান সড়কের পাশে এমন একটি পরিবেশ দেখে চিন্তা করলাম, যে স্থানে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন হয়েছিলো। সেই জায়গাটি দেখতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দর্শনার্থীরা আসে।

আর সেই ঐতিহাসিক মুজিবনগরে ঢুকতে থানাটি সকলের চোখে পরে। এমন একটি ঐতিহাসিক জায়গায় অবস্থিত থানাটি যদি অপরিষ্কার থাকে তাহলে মুজিবনগরের দূর্নাম হবে।

তাই সেই দিক লক্ষ করে মুজিবর্ষকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের সম্মান ও পুলিশের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখার সার্থে পুলিশ সুপার স্যারের অনুপ্রেরনায় আমার ব্যাক্তিগত উদ্যেগে চারিদিকে বিভিন্ন ধরনের বাগান তৈরি করে থানা প্রাঙ্গনকে সাজিয়েছি।এমন একটি সুন্দর উদ্যেগ গ্রহন করতে পেরে আমি নিজেও আনন্দিত।