বরিশালে হত্যা করে লাশ ফেলে যায় কুষ্টিয়ায়

রাধা রানী (৪৩) নামের এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে। পুলিশি তদন্ত বলছে, হত্যাটি করা হয় বরিশালে। আর তার হত্যার দায় থেকে নিজেদের বাঁচাতে খুনিরা এ কাজ করলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেল না কেউই।

পুলিশ প্রথম ৬ ঘণ্টার মধ্যে নারীর নাম ঠিকানা সংগ্রহ, হত্যায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দসহ সকলকে গ্রেফতার করেছে। পরে ঘটনায় জড়িতদেরও শনাক্ত করে পুলিশ । নিহত রাধা রানী নীলফামারী সদর উপজেলার সন্তোষ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী।

গতকাল রবিবার সকালে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যার পুরো বিষয় জানিয়ে ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আতিকুল ইসলাম আতিক, কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান।

গত ৫ নভেম্বর কুমারখালী উপজেলার করাতকান্দি এলাকা থেকে এক অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ভোটার তালিকার সহায়তায় পরিচয় বের করা হয়। ‘রাধা রানী রায় ঢাকায় কাজ করতেন। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় বাবা সুনিল চন্দ্র রায়ের বাড়িতে থাকতেন, সেখানে আসা যাওয়া করতেন। এরই মাঝে বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের বহরকাঠি গ্রামের আব্দুর রশিদের সাথে তার ঢাকায় পরিচয় হয়। ৭ মাস আগে তারা বিয়ে করেন। তবে রাধা রানীর পরিবারের কেউ বিষয়টি জানতো না।

আব্দুর রশিদের আরও একজন স্ত্রী রয়েছে। তার দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি প্রথম স্ত্রী জেনে গেলে মুসকিলে পড়েন আব্দুর রশিদ। এই টানাপোড়োনে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী রাধা রানীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরই মধ্যে চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে রাধা রানী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন আব্দুর রশিদ।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্দুর রশিদ রাধা রানীকে নীলফামারী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বরিশাল মেডিকেল কলেজ থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। ৪ নভেম্বর রাধা রানীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আব্দুর রশিদ কয়েকজন সহযোগীসহ নীলফামারী রওনা হন। পথে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে কুমারখালী উপজেলার করাতকান্দি এলাকায় মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়।

তিনি আরও জানান, নিহতের পরিচয় জানার পর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও সিসি টিভির ফুটেজের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্স চালক হানিফ মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। কুষ্টিয়া আদালতে হানিফ মোল্লা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সব স্বীকার করেছে। পরে ঘাতক আব্দুর রশিদ ও তার সহযোগী আলামিন খলিফাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।