বাগোয়ানে ৫ প্রকল্পের ১৮ লাখ টাকার কাজে নয়ছয়!

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৪০ দিনের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় মাটির রাস্তা সংস্কারে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের তীর উঠেছে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেনের বিরুদ্ধেও। আযুব হোসেন বাগোয়ান ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

জানা গেছে, ইজিপিপির আওতায় বাগুয়ান ইউনিয়নে পাঁচটি প্রকল্পে মোট ১১০ জন দরিদ্র শ্রমিকের জন্য দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি হিসেবে ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নামকাওয়াস্তে কাজ সমাপ্ত হয়েছে। উপকারভোগী দরিদ্র শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অতি দরিদ্র শ্রমিকের মধ্যে নিজের আপন স্বচ্ছল ভাইয়ের ও এক একনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সহকারীর।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রমজান আলীর (প্রকল্পের চেয়ারম্যান) ৩২ জন উপকারভোগীর জন্য তার বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা। তার সাথে বনিবনা না হওয়ায় প্রকল্পের চেয়ারম্যান পরিবর্তন করে নাম দিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মাবিয়া খাতুনের। কিন্তু মাবিয়া খাতুন বলছেন এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এমনকি প্রকল্পের নামটিও তিনি বলতে পারেন নি । বিল উত্তোলনের বিষয়ে স্বাক্ষর দিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শ্রমিক সর্দার রশিদ কিসে যেন স্বাক্ষর নিয়েছেন। প্রকল্পের কাজ চলাকালীন সময়ে প্রকল্প চেয়ারম্যান পরিবর্তন করা যায় কিনা এবং সেটি কোন আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাসের কাছে জানতে চেয়েছেন রমজান আলী মেম্বার।

ইউনিয়নের ৭ন ওয়ার্ডের সদস্য ওমর ফারুক বলেন, কর্মসূচিটি অতি দরিদ্রদের জন্য হলেও আমি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও আমার সাথে নাম নেওয়া হয়েছে মাত্র ৬ জন দরিদ্র শ্রমিকের। কিন্তু কাজ হচ্ছে পূর্বের লিস্ট অনুযায়ী। এখানেও কেন জানি রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক সর্দার রশিদ আলী জানান, চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর ভাই ও সেতু নামের দুজন শ্রমিক তাদের সাথে কখনোই কাজ করেনি।
ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় জানান, ৪০ দিনের পরিবর্তে এখানে আনুমানিক ১৮ /২০ দিন কাজ করা হয়েছে এবং কোন রকম নামকাওয়াস্তে রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে।

বাগোয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, প্রকল্পে যতটুকু মাটি দেওয়ার কথা তার থেকেও বেশি দেওয়া হয়েছে। এসব ছোটখাটো কাজ নিয়ে যারা অভিযোগ করে তারা ভালো নয়। তার ভাই ও স্বজনদের শ্রমিক হিসেবে নেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান।

মুজিবনগরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নাহিদা ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এবং মুজিবনগরে তার অতিরিক্ত দায়িত্ব তাই বিষয়টি সম্পর্কে পরে জানানো হবে বলে জানালেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (গতকাল বুধবার) জানাননি।