বিচারপতি ড. রাধা বিনোদ পাল সম্পর্কে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে: ব্যারিস্টার সুমন

বিচারপতি ড. রাধা বিনোদ পাল সম্পর্কে অনেকেই জানে না। তার সম্পর্কে বেশি বেশি করে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত আইনজীবী ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
তিনি বলেন, একজন বাঙালি আইনবিদ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ছিলেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দূরপ্রাচ্যে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারার্থে স্থাপিত আন্তর্জাতিক সামরিক আদালতের বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের অখ্যাত গ্রাম কাকিলাদহের জর্জ পাড়া এলাকায় বিচারপতির সেই পুকুর সংলগ্ন পরিদর্শণকালে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে লাইভে একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “জাপান-বন্ধু ভারতীয়” বলে খ্যাতি রয়েছে তার। জাপানের ইতিহাসে রাধা বিনোদের নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। জাপানের টোকিও শহরে তার নামে জাদুঘর, সড়ক ও স্ট্যাচু রয়েছে। জাপান বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি রিসার্চ সেন্টার রয়েছে। তিনি আইন সম্পর্কিত বহু গ্রন্থের রচয়িতা।অথচ আমরা বাঙালীরা অনেকেই তার সম্পর্কে অবগত নই। আমাদের তাঁর সম্পর্কে আরও বেশিবেশি করে জানতে হবে।

তিনি ফেসবুক লাইভে আরও বলেন, ১৯২০ সালে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও ১৯২৫ সালে আইনে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯১৯-২০ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমহন কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে তিনি কর্ম জীবন শুর করেন। ১৯২৫-১৯৩০ এবং ১৯৩৬ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠাকুর আইনে অধ্যাপনা করেন। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকের্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৪১-৪৩ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৪৩-৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশাল মাপের প্রতিভাবান ব্যাক্তিত্ব ড.রাধা বিনোদ পালের সুখ্যাতি শুধু পাক ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের শেষের দিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাল ১৯৪৬-৪৮ সাল পর্যন্ত জাপানের রাজধানী টোকিও মহানগরীতে জাপানকে যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত করেও বিশেষ আন্তর্জাতিক আদালতের যে বিচার কাজ শুর করা হয় তিনি ছিলেন তার অন্যতম সদস্য। তিনি তার ১২০০ পৃষ্ঠার যৌক্তিক রায় দিয়ে জাপান কে যূদ্ধাপরাধ থেকে মুক্ত করেন। তার এ রায় বিশ্বনন্দিত ঐতিহাসিক রায়ের মর্যাদা পায়। এরপর তিনি জাপান বন্ধু ভারতীয় বলে খ্যাতি অর্জন করেন।

এসময় তিনি বিচারপতির নামে একটি স্কুল পরিদর্শন করেন স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। এসময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।