‘মসজিদের নগরীকে ক্যাসিনোর শহর বানানো হয়েছে’

মসজিদের শহর ঢাকাকে এখন ক্যাসিনোর শহরে পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, মিথ্যা উন্নয়নের নামে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করা হয়েছে। আজকে ঢাকা শহরকে জুয়াড়িদের শহরে পরিণত করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এই মানবন্ধনের আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে মঈন খান বলেছেন, ক্ষমতার দম্ভ দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। অতীতে পাকিস্তানিরাও পারেনি। আপনারাও করতে পারবেন না।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি। যিনি সুদীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে গণতন্ত্রের লড়াই করছেন। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। কারণ তিনি গণতন্ত্রের কথা বলেন। এ জন্যই তাকে কারাবন্দী করা হয়েছে। সরকার হয়তো ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে নির্বাচন, প্রশাসন, ও অর্থনীতি সবকিছু দখল করে রেখেছে। কিন্তু ক্ষমতার দম্ভ দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। পাকিস্তানিরাও পারেনি। এই সরকারও পারবে না।

আবদুল মঈন খান বলেন, বেগম জিয়াকে চিকিৎসার মত মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। সেজন্য চিকিতসকেরা আজকে মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য রাস্তায় নেমেছেন। দেশনেত্রীর জামিন না দেয়ার জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।
দেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় পরিণত করেছে। আসুন আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে দেশনেত্রীর মুক্ত করি।

মানবন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী লীগের দুই কান নষ্ট। কথা বললে তারা শোনে না। তারা কয়লা ময়লা, পাথর ব্যাংক বীমা সবই খায়। কিছু ভালো কাজের জন্য আমরা তাদের প্রশংসা করি। কিন্তু যখন দেখি তাদের সামনে দিয়ে চোর ডাকাত ছিনতাইকারী চলে যায় তখন ব্যাথা পাই। তাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশের অনিয়ম দূর বা বন্ধ করা যাবে না।

বিএনপির আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজানো রায় দিয়ে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে অবৈধ সরকার। আজকে দেশের ষোলো কোটি মানুষ তার মুক্তি চায়। কারণ বেগম জিয়া ছাড়া দেশের মানুষ অনিরাপদ। বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার পর দেশের গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধকেও কারাগারে নেয়া হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। নির্বাচনের নামে মধ্যরাতের সার্কাস করা হচ্ছে। অবিলম্বে দেশনেত্রীর মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে বাংলাদেশকে ডাম্পিং ল্যান্ড বানানো হয়েছে। আবারো আসামের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার চক্রান্ত চলছে।

দেশের সর্বত্র লুটপাট চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে পুরোনো ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ছাত্র রাজনীতিকে কলংকিত করেছেন ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা চাঁদাবাজি করেছে।

রাজধানী এখন ক্যাসিনোর শহর মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা জানতাম মসজিদের শহর ঢাকা। অথচ এখন তা অবৈধ সরকারের ডিজিটাল উন্নয়নের খপ্পরে পরে ক্যাসিনোর শহরে পরিণত হয়েছে। আরো রহস্য উদঘাটন হচ্ছে। ক্যাসিনোর টাকা শুধু যুবলীগের নেতারা পান না। এই টাকা আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের বাসায় যায়। তাদেরকেও খুঁজে বের করতে হবে। বাকি যত ক্যাসিনো আছে সে সব চিরতরে বন্ধ করুন। না হলে জনগণ বুঝবেন এ সব লোক দেখানো এবং তারা নিজেই সে সব বন্ধ করবে।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুস সালামের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের কোষাধ্যক্ষ ডা. শাকিল, সহসভাপতি ডা. শহিদুল ইসলাম সিরাজ, দফতর সম্পাদক ফখরুজ্জামান ফখরুল, মাসুদ রানা, রংপুর বিভাগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মারুফ হাসান, শহিদুল ইসলাম, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. বদর উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. একেএম ফরিদ উদ্দিন, ডা. মেহেদী হাসান প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিনিধি