বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক একজন মসজিদের ইমাম ও সমাজসেবক , নাম হামিদুর রহমান রানা। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বলিভদ্রপুর গ্রামে বাড়ি। পরিবারে অর্থনৈতিক সংকট, মাথার গুজার ঠায় হিসেবে আছে শুধু একটি ভিটে বাড়ি। তবুও তাকে অপরাধী বানাতে চায় একটি বিশেষ মহল।
গত মাসের ২৯ জুলাই দুইকটি পত্রিকায় এই রানার বিরুদ্ধে পৌরসভায় চাাঁদাবাজি, এলাকায় দুর্নীতি ও সীমান্ত অপরাধের অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অথচ এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ, স্বাক্ষ্য বা ভুক্তভোগীর কোন বক্তব্য তুলে ধরা হয়নি। প্রতিবেদনে এমন সব দাবি করা হয়েছে যা সরেজমিন অনুসন্ধানে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।একটি বিশেষ মহল সারাদেশে জুলাই আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এটা তারই ধারাবাহিকতা।
জানা গেছে, রানা প্রায় ১২ বছর ধরে মহেশপুর উপজেলার স্থানীয় রামচন্দ্রপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে মাসিক কিছু টাকার বিনিময়ে ইমামতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বাবা একজন দিনমজুর ও রাতের বেলা পুকুর পাহারার কাজ করেন। ভাইয়েরা কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ দর্জি কাজ করেন। সংসার চলে অভাব-অনটনের মধ্যেই।
বেশ কিছু দিন পূর্বে তিনি তার বাড়িতে পোষা গরু এবং ছাগল আর পূর্বের পুরাতন একটি মোটরসাইকেল বিক্রি করে কিছু টাকা খালিশপুর এক মোটরসাইকেল শোরুমে দিয়ে বাকিতে একটা মোটরসাইকেল কিনে। যা সেই শোরুম এখনো তার কাছে ৮২ হাজার টাকা পাবে। তার হাতে ভাঙা মোবাইল ফোন যার দাম হয়তো ১২/১৪ হাজার টাকা হবে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা হাশেম,শাকিল এরা বলেন, রানা খুবই ভালো ছেলে। মসজিদে নামাজ পড়ায়, এলাকায় কারও ক্ষতি করে না। ওর নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চরিত্রহননের চেষ্টা চলছে।
মসজিদের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি ইনতাজ আলী জানান, রানা অত্যন্ত ধর্মভীরু, সৎ ও সাদাসিধে জীবনযাপন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার পিতা দিনে পরের জমিতে কাজ করে আর রাতে পরের এক পুকুর পাহারা দেয়। তাদের ভিটে বাড়ি ছাড়া মাঠে কোন জমি নেই।
এবিষয়ে মহেশপুর উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহবায়ক হামিদুর রহমান রানা বলেন,আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেয় করা হচ্ছে। কিছু প্রভাবশালী মহল আমার সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা মেনে নিতে পারছে না। আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এবিষয়ে মহেশপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, আমি কালের কণ্ঠে কোনো বক্তব্য দিইনি। তারা যা ছেপেছে, তা তাদের মনগড়া ও মিথ্যা বক্তব্য।
এদিকে সুশীল সমাজ বলছে,সংগঠনের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেই কেউ অপরাধী হয় না। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া কাউকে এভাবে হেয় করা অনৈতিক ও সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।
তারা আরও বলছেন কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি একটি অসহায়, ধর্মপ্রাণ, সাধারণ পরিবারের সন্তানের বিরুদ্ধে একপাক্ষিক, প্রমাণহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা। রানার মতো একজন ইমামকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা, শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজ ও সাংবাদিকতা নীতির বিরুদ্ধেও এক ভয়াবহ আঘাত। এদিকে একটি মহলের ইশারায় জুলাই আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চলছে, যা উদ্বেগজনক। আমরা এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই। এবিষয়ে প্রশাসনকে সঠিক ভাবে তদন্ত করার দাবি রাখেন রানা।