মানবপাচারকারীর হোতা মেহেদীর অপকর্ম সম্পর্কে জানেনা গ্রামের কেউ !

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের যতারপুর গ্রামের মেহেদী হাসান বিশ্বাস ওরফে বিজন বিশ্বাস। তিনি ওই গ্রামের মোস্তাকিন আহমেদ টুলুর বড় ছেলে।

মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ব্রুনেইয়ে প্রায় ৫হাজার নিরীহ মানুষকে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মেহেদী হাসানের তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর বিষয়টি সারাদেশে আলোচনার ঝড় তোলে। তিনি ব্রনেই আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

তিন ভাইয়ের মধ্যে মেহেদী হাসান বড়। মেজ ভাই বিপু এলাকায় থেকে চাষাবাদ দেখা শোনা করেন এবং ছোট ভাই বাপ্পি রাজধানীতে লেখাপড়া করেন। বাবা মোস্তাকিন আহমেদ টুলু এক্সপোর্ট ও ইমপোর্ট ব্যবসা করতেন। বর্তমানের প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে মেহেদীর গ্রামের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছুদিন আগে একটি দ্বিতল ভবন নির্মান করেছেন। এছাড়াও গ্রামে একটি ডেইরি ফার্ম তৈরি করার প্রক্রিয়া চলছে। তার বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করা হলে বাড়ির মুল গেটের বাইরে থেকে তালা লাগানোর কারণে ভিতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি তারা বাড়িতে কেউ আছেন কিনা সেটাও জানা যায়নি।

তবে মেহেদী মানব পাচারকারীদের মুল হোতা এ বিষয়ে গ্রাম বাসী বা তার আত্মীয় স্বজনরা কিছুই জানেন না। মেহেদী গ্রামের ভালো ছেলে হিসেবেই এলাকার মানুষ জানেন। তবে তাদের পূর্ব পুরষরাও প্রভাবশালী ও সম্পদশালী। মেহেদী হাসানের দাদা মাদার আলী বিশ্বাস তিন বারের ইউপি চেয়ারম্যান । তার বড় চাচা মওলা বক্স বেবী তিনিও তিন বারের ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। তার পরিবারের সকলেই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও বর্তমানে তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন বলে দাবি করেছেন তার মেহেদীর চাচা বিল্লাল হোসেন কটা।

বিল্লাল হোসেন কটা জানান, তাদের এক ভাই মাসুদ রানা ওরফে এনামুল দির্ঘদিন ধরে ব্রুনেইয়ে থাকতেন। বিজনের বাবা মোস্তাকিন আহমেদ প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ায় মানবিকতা দেখিয়ে এনামুল বিজনকে ব্রুনেইয়ে নিয়ে যান ২০১২ অথবা ২০১৩ সালের দিকে। তার কিছূদিন পর এনামুল দেশে ফিরে আসেন। তবে বিজন মানবপাচারকারী এ বিষয়ে তারা কিছু জানেন বললেও পরবর্তিতে তার পক্ষে নিউজ করার জন্য তিনি এ প্রতিবেদককে সুপারিশ করেন।

মেহেদীর এক গ্রাম্য প্রতিবেশী জালাল উদ্দিন জানান, আমরা এলাকায় তাঁকে ভাল ছেলে হিসেবে জানি। তারা বংশ বুনিয়াদি মানুষ। তবে বিদেশে কোন অন্যায় অপকর্ম করে কিনা জানেন না।

শফিকুল ইসলাম রাহিন নামের আরেক প্রতিবেশী জানান, কিছুদিন ধরে শুনছি বিজন কি একটা ঝামেলায় পড়েছে। দুতাবাস নাকি তার পাসপোর্ট আটকিয়ে দিয়েছে। তবে এর বেশি কিছু জানিনা।

এদিকে মেহেদী হাসান বিজনের ফেসবুক আইডি রয়েছে বিজন বিশ্বাস (Bizon Bisswas ) নামে। এই আইডি প্রোফাইল পিকচার রয়েছে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর সাথে। বিভিন্ন সময়ে ওই মন্ত্রির সাথে ছবিও রয়েছে তার। সম্প্রতি প্রভাবশালী ওই মন্ত্রী মেহেরপুর আসলে তখন মেহেদীকে মন্ত্রীর সাথে দেখা গেছে বিভিণ্ন ছবি সেটা দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে তার ছবি দেখা গিয়েছে।

মেহেদী হাসান বিজনের মোবাইল ফোন (০১৯১৬-৬১৩৮৩৮) এ যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।