
যেখানে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা এক বছরের অনুশীলনের পর বসেছে বার্ষিক পরীক্ষায়, সেখানে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালীন মুজিবনগর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা উচ্চমান গ্রেডের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা পরিচালনা করছেন প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের দপ্তরী। যেখানে সহকারী শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষা পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে, সেখানে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে পরীক্ষা পরিচালনা করা হচ্ছে।
১০ম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে সকাল থেকেই উপজেলা পরিষদ চত্বরে কর্মবিরতি করছেন।
এদিকে বার্ষিক পরীক্ষা চললেও শিক্ষকদের এ কর্মসূচির কারণে পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। শিক্ষা কার্যক্রমে বিরতি পড়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
সকালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, একাধিক শ্রেণীকক্ষে পরীক্ষা চলছে। প্রধান শিক্ষকরা একা সামলাতে না পেরে কিছু ক্লাসে দপ্তরী বসিয়ে রাখছেন, কিছু ক্লাসে অভিভাবকদের বসিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করছেন।
মুজিবনগর উপজেলার কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেছেন, দাবি-দাওয়ার নামে শিক্ষকদের হঠাৎ কর্মবিরতি পুরোপুরি শিক্ষার্থীদের ‘জিম্মি’ করে ফেলেছে। পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষকরা না থাকায় শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে।
আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, সরকারের পূর্ব ঘোষিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে কঠোর কর্মসূচি নিয়েছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে দশম গ্রেডে বেতন প্রদান পদোন্নতি কাঠামো পুনর্বিন্যাস, সহকারী শিক্ষকদের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত দায়িত্ব কমানো, বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষকরা সবচেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
ভবরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম ফারুক বলেন, সহকারী শিক্ষকরা না থাকায় নিজেকেই পরীক্ষা পরিচালনা করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে সমস্যা হলে কিছু ক্লাসে দপ্তরী এবং কিছু ক্লাসে অভিভাবক বসিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছি। যত কষ্টই হোক, পরীক্ষা শেষ করাতে হবে।
মুজিবনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, মুজিবনগর উপজেলায় ৩৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছে। সহকারী শিক্ষকরা আন্দোলন করায় প্রধান শিক্ষকদের একলার পক্ষে পরীক্ষা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও শিক্ষার্থীরা যাতে পরীক্ষা দিতে সমস্যা না হয়, সেই বিষয়ে আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রতিনিয়ত স্কুলগুলোতে খেয়াল রাখছি।