মেহেরপুরের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো ভুগছে ওষুধ সংকটে

‘কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ’ এ শ্লোগানে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নব্বই দশকের শেষের দিকে সরকার চালু করে কমিউনিটি ক্লিনিক। মা ও শিশু স্বাস্থ্যর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে এই ক্লিনিক গুলো। বর্তমানে সারাদেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা ৭১টি। এর মধ্যে সদরে ২৫টি, গাংনী উপজেলায় ৩৫টি এবং মুজিবনগর উপজেলায় ১১টি।

এসকল কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে ২৭ ধরনের ওষুধ সরবরাহ থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে সরবরাহ আছে ১৪ ধরনের ওষুধ। কোন কোন কমিউনিটি ক্লিনিকে এর চাইতেও কম। এমন অবস্থায় সেবা পাওয়ার আশায় সাধারণ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে আসলেও ফিরতে হচ্ছে হতাশা নিয়ে। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও তাদের যেতে হচ্ছে হাসপাতাল বা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও তাদের যেতে হচ্ছে হাসপাতাল বা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে।

গতকাল রবিবার জেলার বিভিন্ন ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায় রোগী কয়েকজন আসলেও ঠিকমত ওষুধ পাচ্ছে না তারা। আশরাফপুর গ্রামের বিলকিস খাতুন জানান, শারীরিক সমস্যার কারনে কমিউনিটি ক্লিনিকে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে বললো আপনার যে সমস্যা তার ওষুধ আমাদের কাছে নেই। আমদের কাছে শুধু জ্বর-সর্দি,কাশি,ক্রিমির ওষুধ আছে।

আশরাফপুর গ্রামে অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপি সামারুল ইসলাম জানান, গতকাল থেকে ফুলটাইম কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হয়েছে। কিন্তু শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার মত আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ নেই। আমাদের কাছে বর্তমানে, প্যারাসিটামল, হিসটাসিন, জ্যামসন ভায়োলেট, জিংক ট্যাব, আয়রন ট্যাব, ভিটামিন বি ক্যাপ, চোখের ড্রপ, ক্রিমি নিরাময় ওষুধ, ক্যালসিয়াম ট্যাব সহ মোট ১৪ ধরনের ওষুধ আছে। এসব নিয়ে আমরা সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার জানান, আমরা সর্বশেষ গত ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর ওষুধ সরবরাহ পেয়েছিলাম। প্রতি তিন মাস পরপর ওষুধ সরবরাহ আসার কথা থাকলেও করোনা প্রাদুর্ভাবের কারনে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে ওষুধ সরবরাহ করতে পারিনি।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম জানান, সরকারি ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকলেও আমাদের মজুদে যে ওষুধগুলো আছে সেগুলো দিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের গাংনীতে ৩৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে সাধারণ রোগের প্রায় সকল ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।

মুুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ান জানান, করোনার কারনে ওষুধ সরবরাহ কিছুটা বন্ধ আছে। তবে আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে সেবার মান ভালো আছে। সাধারণ সর্দি-কাশি, গর্ভবতি মায়েদের ও শিশুর জন্য মোটামুটি ওষুধ সরবরাহ আছে।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন জানান, সাধারণ ছুটির মাঝে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো সীমিত আকারে চালু ছিল। কিন্তু সাধারণ ছুটি প্রত্যাহার হওয়ায় আজ থেকে ফুলটাইম চলবে।

করোনা প্রাদুর্ভবের কারনে ওষুধ সরবরাহ সীমিত ছিল। আমরা আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে শতভাগ ওষুধ সরবরাহ করতে পারবো।