মেহেরপুর আদালত থেকে জামিনে মুক্ত নুরুজ্জামানকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে টেনে হিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়ায় ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের লিটন হোসেন (৪২), জোড়পুকুরিয়া গ্রামের মিঠুন আলী (৩২), জিয়ারুল ইসলাম (৪৫), রামদেবপুরের পারভেজ মোস্তাক (৫১), আসাদুল ইসলাম (৪৫), কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার তেকালার জিন্নাত হোসেন (৩২), সাপাত আলী (৫০), রাজ্জাক (৬৫), প্রাগপুর বীরগাছীর শিপলু (৪৫) এবং মাইক্রোবাস চালক হোসেন আলী (২৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামিন শেষে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকজন ব্যক্তি নুরুজ্জামানকে বেদম প্রহার করে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। আশপাশের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকা থেকে ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৮২০০ নম্বরের মাইক্রোবাসটিকে আটক করে। এ সময় অপহৃত নুরুজ্জামানসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে মেহেরপুর সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
নুরুজ্জামানের ভাই রাজু আহমেদ জানান, নুরুজ্জামান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া গ্রামের মৃত আফজাল মালিথার ছেলে। বিদেশে যাওয়ার জন্য গাংনীর রামদেবপুর গ্রামের পারভেজ আশরাফের কাছে টাকা দেওয়া নিয়ে ২৭ লাখ টাকার একটি মামলা মেহেরপুর আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। জামিন পাওয়ার পর পারভেজ ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুজ্জামানকে অপহরণের চেষ্টা চালায়।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে যা জেনেছি, তাদের মধ্যে একটি আর্থিক লেনদেন রয়েছে, যা বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন।
এ বিষয়ে আদালত ফয়সালা দেবেন। তবে তারা যে কাজটি করেছে একজনকে মারধর করে তুলে নিয়ে গেছে বা অপহরণ করেছে সে বিষয়ে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছি। যেহেতু তারা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ওসি আরও বলেন, বিদেশে যাওয়ার টাকা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে, যা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। মামলার বর্তমান ভিকটিম নুরুজ্জামান কোর্টে আসার পর পারভেজসহ তার লোকজন এসে তাকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমাদের পুলিশ তড়িৎগতিতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে আসামিদের গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, মেহেরপুর জজ আদালতে নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে পারভেজ মুস্তাকিমের দায়ের করা বিশ্বাসভঙ্গ (ধারা ৪০৬), প্রতারণা (ধারা ৪২০) ও অপরাধমূলক হুমকি (ধারা ৫০৬) সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন রয়েছে।