
পাটের আঁশে স্বপ্ন বুনছেন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবপরপাড়া গ্রামের অন্তত শতাধিক বদ্ধা নারী। পাট দিয়ে তৈরী হস্ত শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন প্রাচীনকালের বিলুপ্ত প্রায় হস্ত শিল্প।
তাদের তৈরী নিপুন হাতের কারুকার্য ক্ষচিত জিনিপত্র যাচ্ছে ইটালী আমেরিকা সিঙ্গাপুর সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। জীবনের সব টুকু উজাড় করে দেয়া টিকিয়ে রাখা হস্ত শিল্পীরা বয়সের ভারে নুইয়ে পড়লেও পেশা ছাড়েননি। এসকল শিল্পিদের এখন বড়ই দুর্দিন।
বাংলাদেশে পাট দিয়ে তৈরী জিনিস পত্রের তেমন চাহিদা না থাকাই নতুন করে পেশায় আর কেউ আসতে চাচ্ছেন না। যারা এপেশায় নিয়োজিত রয়েছে সে সকল বৃদ্ধারা সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
৬০ বছর বয়সি সন্ধা মন্ডল, ৬২ বছর বয়সি সুলতা মন্ডল,৬৫ বছর বয়সি মরজিনা বেগম, বৃদ্ধা পারভীনা বেগমসহ অর্ধশত নারী পাটের আঁশ দিয়ে তৈরী ম্যাট,মাছ,পাখি,শিকা,পাপোশ,বিছানাসহ হরেক রকমের জিনিসপত্র তেরী শুরু করেন ১৯৭৬ সালে।
নিজের সংসার সামলে পাট দিয়ে তৈরী হস্ত শিল্পের কাজ শুরু করেন তারা। ভবরপাড়া মিশনের একটি হল রুমে কাজ করার জায়গা করে দেন সে সময়কার এক মিশনের ফাদার। তখন থেকেই একযোগে কাজ শেষ করেন। হস্ত শিল্পিদের অনেকেই বিধবা। অভাবের সংসারে উদ্যোক্তা সন্ধা মন্ডলের সাথে কাজ শেখেন। পরে পাটের গিটে বাধা পড়ে যায় শতাধিক নারী। সকলেই সাবলম্বী হয়ে ওঠেন। সকলেই শিক্ষিত করেছেন ছেলে মেয়েদের। এদের তৈরী হস্ত শিল্প বিক্রি হয়, ইটালী, আমেরিকা সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু বাংলাদেশে পাট শিল্পের বিক্রয় কেন্দ্র না থাকা এবং ব্যাবহার না থাকায় জীবনের সব টুকু উজাড় করে দেয়া হস্ত শিল্পীরা বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছে। তাদের এখন বড়ই দুর্দিন। তদের দাবী দেশে ঐতিহ্যবাহী হাতের তৈরী পাট শিল্পের ব্যাবহার বৃদ্ধি, বাজারজাত করন করলে দেশে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে। সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চান উদ্যোক্তা এসকল বৃদ্ধারা।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মন্ডল বলেন, মুজিবনগরের ভবরপাড়া গ্রামের হস্ত শিল্পিদের বিষয়টি জানতে পেরে ওই সকল বৃদ্ধা উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে তাদের প্রয়োজন জেনেছি। তাদের সরকারি সকল সুবিধার আওতায় আনা হবে।