মেহেরপুরের রাজনগরের আ. লীগ নেতা মুক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা

মেহেরপুরের রাজনগরের আ. লীগ নেতা মুক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার মামলা

মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছে একই গ্রামের মোছা: আশুরা খাতুন নামের এক নারী।

মামলার প্রধান আসামি মুক্তি গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি মুক্তি বিভিন্ন সময়ে মোছা: আশুরা খাতুনকে কু প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এছাড়া তিনি ওই গ্রামের বিভিন্ন নারীদের চাল, গম, টাকা পয়সা বা ভাতা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে থাকেন। কোনো নারী তার কথায় রাজি না হলে বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলে তাকে ধর্ষণ করেন। ইতোপূর্বে গ্রামের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা অবস্থায় লোকজন তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তা মিমাংসা করা হয়।

মামলায় আরো বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন যাবৎ কু প্রস্তাব দিয়ে ব্যার্থ হন মুক্তি।পরে গত ০১/০৬/২৩ তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক রাত সাড়ে ৮ টার সময় ঘরে প্রবেশ করে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক আমার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। স্পর্শকাতর স্থানে সে কামড়িয়ে ও হাঁচড়িয়ে জখম করেছে। পরে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে চিৎকার দিয়ে উঠে। এসময় প্রতিবেশীরা ছুটে এসে বাইরে থেকে দরজার শিকল তুলে দেন। সে হাতে নাতে ধরা পড়ে। পরে স্থানীয়রা এসে বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায়।

মামলার বাদী আশুরা খাতুন বলেন, ছোট বেলা থেকেই মুক্তি আমাকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। তার কথায় আমি রাজি না হওয়ায় আমার স্বামী জয়নাল আবেদীনকে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে দফায় দফায় মারপিট করে পঙ্গু করে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস নেই এলাকার মানুষের। সবাই তাকে ভয় পায়। আশুরা আরও বলেন, আমি কয়েক বছর হলো মুক্তির অত্যাচার থেকে বাঁচতেই মেহেরপুর শহরে এসে ঘর ভাড়া করে থাকি। মাঝে মধ্যে গ্রামে গেলেও চুরি করে যায়। আবার গোপনে ফিরে আসি। সে এলাকার অনেক নারীকেই ধর্ষণ করেছে। ভাতা কার্ড, টিসিবি কার্ডসহ বিভিন্ন অনুদান পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মেয়েদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে ধর্ষণ করে থাকে। তিনি বলেন, আমি তার হাত থেকে বাঁচতে চাই। আমি আমার বাড়িতে নিরাপত্তার সাথে থাকতে চাই।

প্রতিবেশী তাসলিমা খাতুন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তি এলাকার বহু নারীর কাছে জোর করে যাওয়ার প্রমাণ আছে। এলাকার নারীদের বিভিন্ন জিনিস দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সে অনৈতিক কাজ করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহষ নেই। অনেক মেয়ে মুখ বুঝে এই মুক্তির অত্যাচার সহ্য করছেন।

এদিকে মামলার প্রধান আসামি মেহেরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মুক্তি জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি তাকে ধর্ষণ করতে যায়নি। জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সাথে আশুরার গ্যানজাম চলছে। আমি সেই সালিশ বৈঠকের বিচারক ছিলাম। আমার সাথে শত্রুতা করে সে এই মামলা দিয়েছে। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, সে এবার গ্রামে আসুক। তারপর তার বিচার হবে।