মেহেরপুরের সড়ক কাঁপাচ্ছে কিশোর ড্রাইভাররা

নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। নেই সড়কে চলাচলের সংকেত সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা। তারপরও শত শত কিশোর মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, লক্কর-ঝক্কর মাইক্রোবাসের চালকের আসনে নিয়মিত ড্রাইভার। এসব অনভিজ্ঞ কিশোর চালকের হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং ঘিরে সড়কে ঘুরছে নিজেদেও ও সাধারণ যাত্রীদের জীবনচাকা।

প্রশাসনের তেমন নজরদারি না থাকায় দিন দিন সড়কে অনভিজ্ঞ লাইসেন্সহীন কিশোর চালকদের মটরসাইকেল ও ইজিবাইকের হ্যান্ডেল ধরার প্রতিযোগিতা বেড়েই চলছে। কখনও প্রয়োজনের তাগিদে আবার কখনও শখের বসে লোকাল সড়ক থেকে প্রধান সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এর ফলে ছোট খাটো দুর্ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে।

মেহেরপুর জেলা অটো ইজিবাইক মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ি জেলায় প্রায় ৮ হাজারের মত অটো চলাচল করে। সমিতির আওতাভুক্ত ১৮শ মত। এদের ভিতর অনেকেই অপ্রাপ্ত বয়সের ড্রাইভার। সরকারিভাবে এইসব অটো চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। ছোট মেহেরপুর শহরে প্রায় ২ হাজার অটো চলাচল করে। যাদের বেশির ভাগই অনভিজ্ঞ ড্রাইভার। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে নেই নুন্যতম ধারণা।

এছাড়াও মোটরসাইকেল নিয়ে সড়ক কাঁপাচ্ছে কিশোর ড্রাইভাররা। গ্রাম থেকে শহর সবখানেই তাদের বিচরণ। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের দায়ি করছে সচেতন মহল। ছেলের আবদার পূরণের জন্য অপ্রাপ্ত বয়সেই তুলে দিচ্ছে গাড়ির চাবি। মেহেরপুর ট্রাফিক পুলিশের দাবি, কিশোর চালকরা এ ধরণে যানবাহনে চালকের আসনে বসে কর্তব্যরত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই চলাচল করছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, থ্রিহুইলার, মাইক্রোবাসের শিক্ষানবিশ ড্রাইভার, মোটরসাইকেল, এ ধরণের ৪০ ভাগ যানবাহনের স্টিয়ারিং হাতে নিয়েছে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোররা।
ইজিবাইক ও অটোর বিষয়ে মেহেরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান রিটন বলেন, শহরে ইজিবাইকের সুষ্ঠ চলাচলের বিষয়ে আমরা ক্যাম্পেইন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লোকবল সংকট ও করোনার প্রাদুর্ভাবে এটা দেখভাল করা সম্ভব হয়নি। শহরে চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক ইজিবাইককে পৌরসভা কতৃক অনুমোদন দেওয়া হবে। অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড দেখা হবে। যাতে করে অপ্রাপ্ত বয়সের কেউ যাতে অনুমোদন না পাই সেদিকে খেয়াল রাখা যায়।

মেহেরপুরে ট্রাফিক পরিদর্শক জাহাঙ্গির কবির বলেন, প্রধানসড়কে অবৈধ যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।

এরপরও অপ্রাপ্ত বয়সের চালকরা সড়কে কর্তব্যরত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে। আবার অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় প্রয়োজনের তাগিদে অনেকেই অপ্রাপ্ত বয়সে গাড়ি চালাতে বাধ্য হয়। এ ক্ষেত্রে আমরা তাদের নিরুৎসাহিত করি, অনেক সময় মামলা দিয়েও এই ধরণের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার চেষ্টা করি। সর্বপরি মহাসড়কে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের দিয়ে গাড়ি চলাচল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।